বাংলা সিনেমার মুকুটহীন সম্রাট


ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলা, নায়ক থেকে গরিব বাবা এবং দাদা। সব চরিত্রেই তিনি দক্ষ। বলছি বাংলা সিনেমার অনবদ্য অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের কথা।
ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলা কিংবা মুকুটহীন নবাব নামেও খ্যাত। ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন আনোয়ার হোসেন। প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র অবস্থাতেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন তিনি। তারপর যুক্ত হন মঞ্চ নাটকে। হয়ে ওঠেন মঞ্চ নাটকের পরিচিত ব্যক্তি। ‘হাতেম তাই’ নাটক দিয়ে প্রথম নাট্য ভুবনে আত্মপ্রকাশ করেন।
১৯৬১ সালে মহিউদ্দিনের ‘তোমার আমার’ সিনেমা দিয়ে সিনেমা জগতে তার আবির্ভাব হয়। সেই সিনেমায় ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার অভিনয় নজর কাড়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের। নায়ক চরিত্রে তার আবির্ভাব হয় ‘সূর্যস্নান’ সিনেমা দিয়ে। ষাটের দশকের প্রথম পাঁচ বছরে আনোয়ার হোসেন অন্তত দেড় ডজন সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
কিন্তু তাকে তারকা খ্যাতি এনে দিয়েছিল ১৯৬৭ সালের সিনেমা ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’। এ সিনেমায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার ভূমিকায় অভিনয় করে আনোয়ার হোসেন কাঙ্ক্ষিত জনপ্রিয়তা বা সাফল্যের দেখা পান।
দীর্ঘ ৫২ বছর অভিনয় করেছেন এই বরেণ্য অভিনেতা। তার অভিনীত সিনেমার সংখ্যা পাঁচশ’র বেশি। সমৃদ্ধ অভিনয় জীবনে আনোয়ার হোসেনের প্রাপ্তি কম নয়। দর্শকদের অকৃত্রিম ভালোবাসার পাশাপাশি তিনি অর্জন করেছেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননাও। দেশের ইতিহাসে প্রথম অভিনেতা হিসেবে ১৯৮৮ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেছিলেন।
এছাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর তিনিই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন।২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন আনোয়ার হোসেন।