প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও সাফল্যের নতুন দিগন্ত


২০১৮ সালে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী নিরাপদ সড়ক আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব—প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে ভূমিকা রেখেছে, তা বাংলাদেশের শিক্ষা ও রাজনৈতিক পরিসরে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হলেও, জাতীয় ও সামাজিক ইস্যুতে তাদের শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি হিসেবে কাজ করছে।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের আত্মপ্রকাশ ছিল অবিস্মরণীয়। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অবস্থান এবং সুশৃঙ্খল আন্দোলন জাতির বিবেককে নাড়া দিয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবসময় আইনানুগ এবং শান্তিপূর্ণ পথে থেকে তাদের দাবি আদায়ে সচেষ্ট ছিল, যা তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের প্রতিফলন।
শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদানও প্রশংসার দাবি রাখে। আধুনিক পাঠ্যক্রম, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের তৈরি করছে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য। প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বাস্তবমুখী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম, যা তারা বিভিন্ন ইন্টার্নশিপ, প্রকল্প এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগের মাধ্যমে অর্জন করছে। এসব শিক্ষা তাদের শুধু চাকরির বাজারে নয়, উদ্যোক্তা হিসেবেও সফল করে তুলছে।
শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণ, নেতৃত্বের গুণাবলী এবং পেশাদারিত্বের বিষয়েও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশেষ নজর দেয়। বিভিন্ন ক্লাব, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ দক্ষতা ও দলগত কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ায়। এই বাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো তাদের স্নাতক ডিগ্রির বাইরে এক অনন্য মূল্য সংযোজন করে, যা পরবর্তীতে চাকরির বাজারে তাদের এগিয়ে রাখে।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের কর্মজীবনেও সফলতার হার ক্রমবর্ধমান। পড়াশোনা শেষ করার পর তারা দ্রুত চাকরিতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয় এবং নিজেদের জায়গায় দক্ষতার প্রমাণ দেয়। তারা শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় নয়, বরং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা ও নৈতিক দায়িত্ববোধের সমন্বয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছে।
সব মিলিয়ে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, সামাজিক এবং জাতীয় ইস্যুতে তাদের অবদানের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রায়হান কবির,কবি ও লেখক, কলামিস্ট এবং সাহসী তরুণ প্রজন্মের কন্ঠস্বর।