6:34 PM, 3 July, 2025

হৈম’র সাথে কথোপকথন (দুই)- একে আজাদ

inbound1630453446388539068

জানো হৈম,

পৃথিবীর বয়স যত বাড়ছে প্রকৃতির পুরনো উপাদানসমূহ দিন দিন মাটি চাপা পড়ছে। কি উন্নত প্রাণী! কি উদ্ভিদ! কি ইতর প্রাণী। এ সভ্যতার আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি এই সুধাময়ী মাটির অন্তরালে লুকিয়ে যেতে। হারিয়েছি অবুঝ রঙে আঁকা শৈশব, সারা পাড়া মাড়িয়ে বেড়ানো কৈশোর। চলছে তুমি হৈমর প্রেমে পড়া যৌবন। তুমি আমি আমরা সকলেই হারাবো অন্তরালে। তবুও কেনো এতো ঘর বাঁধার স্বপ্ন আমাদের?

আচ্ছা! তুমি কি প্রতিদিন এইসব বলার জন্যই আমাকে এই ভর সন্ধ্যেয় ডেকে আনো? গতদিন মরু সাগর পাহাড় পাড়ি দিবে আমায় নিয়ে! শোনালে প্রেমের অমোঘ বাণী। আজ আবার নতুন কিছু এনেছ মাথায় করে? দেখো আমরা জানি আমাদের জীবন এমন ধারায় চলমান। তো এতো চোখ উল্টো করে ভেবে কী লাভ বলবে আমায়?

রেগে যাচ্ছো হৈম! দেখো এই ভর সন্ধ্যে বেলায় পাখিরা নীড়ে ফিরছে। একটা জিনিস খেয়াল করেছ নীড়ে ফেরার পূর্বে ওরা সকলেই প্রত্যহ এই গাছটায় সকলে মিলিত হয়। সারাদিনের হিসেব কষে! আর আমি উন্নত প্রাণী হয়েও কোনো হিসেবই রাখি না!
আচ্ছা, ওইযে দেখছ দুটি জোড়া শালিক পাখি। কি সুন্দর বাসা বেঁধেছে উচু ডালটায়। চলো না আমরা ওদের মত উচু ডালটায় বাসা বাঁধি?

আমার বাপু ডাল পালায় বাসা বেঁধে কাজ নেই। তুমিই গিয়ে বাসা বাঁধো! যা ইচ্ছে করো। আচ্ছা, মাথার চুলগুলো এতো বড় হয়েছে, চোখের নিচে অমাবস্যার অন্ধকারের মত কালো দাগ পড়েছে। তুমি এতো অগোছালো কেনো হচ্ছো বলোতো?

অগোছালো কই হুম! শুধু স্বাধীনতা দিয়েছি ওদের। চুল বাডুক ওর মত করে, জীব সত্তাকে ওর মত করে চলতে বলেছি চলুক না!

আমি চললাম আমি আর আমার সু্স্থ মস্তিষ্কে এই সব আনতে চাইনা। তুমি থাকো! কথা বলো তোমার গাছ মাটি পাখির সাথে। আমি আর পারছিনা তোমায় নিয়ে…….

হৈম যাও… তোমার পথপানে আমি চেয়ে রই, যতদূর তুমি না মিলাও আমি দৃষ্টি ফেরাতে পারি কই……..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *