12:01 AM, 21 June, 2025

Better অর Best

inbound8954498205194461758

Better কিছু পাবার আশায় Best কিছু হারানোর নজির দিন দিন বেড়েই চলেছে, অনেকটা সোনার দাঁত লাগাবার লোভে আসল দাঁত ফেলে দেয়ার মত হাবাদের মত।

কখনও কখনও ভেবেই পাই না আমাদের এত ডিমান্ড কেন থাকবে! পেট ভরে খেতে পারাটাই আল্লাহর অনেক বড় নিয়ামত। কেন তবে বিরিয়ানী, পোলাও, চাইনিজ হাবি জাবির পিছে ছুটে জিহবার জল ফেলবো। ইচ্ছা করতেই পারে। তাই বলে কি বাড়া ভাতের প্লেট ফেলে চাইনিজ খেতে হবে?

কেউ একজন দিলো সেটা না দেখে আমাদের চোখ পড়ছে প্রাইজ ট্যাগের উপর। ২০০০/- এর উপরে গেলেই বেশ ভাল। এর কমে গেলেই নাক উচকিয়ে এমন ভাব যেন ফকিন্নিরা এসব পড়ে বা দেয়। একটা বার ভেবে দেখেন তো, আপনার কোটি টাকা থেকে ১০,০০০ টাকায় দেয়া গিফট টা মূল্যবান নাকি নিজের মাত্র ৩০০০/- টাকা থেকেই ১৫০০/- টাকার গিফট টা মূল্যবান? পারবেন নাকি নিজে না খেয়ে সেই খাবার টাকাটা পর্যন্ত কাউকে উপহার দিয়ে দিতে?

এত লোভ আমাদের কেনই বা থাকতে হবে? কি হলো যদি বউয়ের বাবা আপনার পুরা বাসাটা সাজিয়ে দিতে না পারলো? সে তার মেয়ের ঘরটা তো সাজিয়ে দিয়েছে। তাহলে কেন তাকে রোজ আপনাদের গালি দিতে হবে ফকিন্নির বাচ্চা বলে? কেনই বা তুলনা করবেন বোন বা ভাবীদের সাথে? একটু হিসাব করে দেখেন তো আপনাদের বোনকে যতটা দিয়েছে তার শশুর বাড়ী থেকে তার ১০০ ভাগের ১ ভাগও কি আপনারা এই বউকে দিয়েছেন? না হয় বাদই দিলাম। আপনার ভাবীদেরই আপনারা যা দিয়ে যেভাবে এনেছিলেন, এই বউকে কি তার ১০০ ভাগের ১ ভাগও দিয়েছেন? তাহলে এত লোভ বা এত তুলনা করার কি মানে হয়? হিসাব তো ঠিকই আছে। আপনারা যেমন দিবেন তেমনই পাবেন। তারপরেও তো বেশিই পেয়েছেন এটা কেন ভাবেন না।

ধনীর ঘরে গরীবের মর্যাদা সব সময় ছোটই থাকে। নাক উচকিয়ে তাদের ছোটই করা হয়। দালানে থাকলেও তাদের বস্তির মানুষ হিসেবেই দেখা হয়। কিন্তু এটা কেউ দেখে না যে, সেই গরীব মানুষটা তাদের জন্য কি করছে বা কোন পর্যায় পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। বা এটাও ভেবে দেখে না যে, গরীবের ঘরে ধনী মেহমান গেলে তারা বেষ্ট থেকেও বেষ্ট করার চেষ্টা করে।

আসল কথা হল, ঠকতে আমাদের বেশ মজা লাগে। লোভে পড়ে নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মেরে দুষী অন্যদের। অন্যরা কি শিখিয়ে দিয়েছিল যে, তুমি লোভ করো! শুধু শুধু ভোগান্তি অন্য মানুষগুলোর।

আসলে আমাদের পোষায় না এমন কাজ করাই উচিত না। বিশেষ করে বিয়ে নামক প্রথার জন্য ফালতু ভোগান্তি। আমাদের সবার উচিত আগে নিশ্চিত হওয়া যে, কেমন বউ বা কেমন জামাই চাই। ভাল মানুষ আশা করলে চেহারা, টাকা, বাহ্যিকতা ভুলে গিয়ে মানুষ হিসেবে বিচার করে আগানো উচিত। টাকা পয়সা চাইলে শুধু টাকাই আশা করা উচিত। সেই মেয়ে বা ছেলে ভাল হবে, মেয়ে বাসার কাজের বুয়ার গুন বহন করবে, ছেলে বউ পাগলা হবে, পরকীয়া করবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি আশা বাদ দিন। শুধু টাকা ধুয়েই পানি খান।

রূপটাই যদি মূখ্য হয় তবে শুধু রূপটাই আশা করেন। পরে আবার টাকা, যৌতুক, কাজের বুয়ার গুন, আবার বিশ্বাসী ভাল মানুষও কোন আক্কেলে আশা করেন? রূপ চাইলে তার মাঝে অন্য সব থাকা খুব একটা সম্ভব না। থাকলে আপনারা চরম ভাগ্যবান।

কত কত জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই বেষ্ট বেটারের চক্করে। লোভের শেষ নাই কারো, সবার যেন সবই চাই। টাকা, বাড়ী, গাড়ী দেখে সব দিক কনসিডার করার পরে শুরু হয় মানুষটাকে দিন রাত মানসিক ভাবে অত্যাচার। রূপ নিয়ে খোটা, টাকা নিয়ে খোটা, কিছুর থেকে কিছু হইলেই তোমার চলন বাঁকা।

আপনারা কেন ভুলে যান, ধনীর দুলালীরা কাজের বুয়ার মত তাড়াতাড়ি বা দিন রাত কাজ করতে পারে না। তাদের কাছে কাজের বুয়ার গুন আশা করা বোকামী। শিক্ষিত মেয়ে চাইলে তাদের কাছে আবার গ্রামের অশিক্ষিত মূূর্খ মেয়েদের গুন কি করে আশা করেন যে, দিন রাত নোংরামী করবেন, নোংরা গালি গালাজ করবেন, লাত্থি উষটা মারবেন। কিন্তু বেচারী টু শব্দও করবে না, পাল্টা জবাবও দিবে না, প্রতিবাদও করবে না! আপনাদের আক্কেল কি গাছে উঠে থাকে?

চাইতে গেলে তো বহু কিছুই চাওয়া যায়। কিন্তু সীমাটা কি আমাদের বজায় রাখা উচিত না? রিকশাওয়ালা চাইলো নায়িকা মৌসুমীকে বিয়ে করতে। প্রপোজালও পাঠায় দিলো। বিষয়টা কতটা হাস্যকর হবে ভেবে দেখেন তো। এমন ডিমান্ড আমরা করিই কিভাবে যেটা আসলে অনাচার ছাড়া আর কিছুই না। এমন সব ডিমান্ড দিনের পর দিন আমাদের শেষ করে দেয়। জীবনটা ছেলে খেলা বানিয়ে ফেলে। অদ্ভুত হলেও সত্য যে, এমন বহু ডিমান্ড নিয়ে দিনের পর দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বহু নারী ও পুরুষের জীবন।

হয়তো আমরা বেটার কিছু পেতে পারতাম বা পারিও। কিন্তু আমাদের সম্বল বেষ্টটা তো আছেই। তাহলে কেন বেষ্টটা ভুলে বেটারের পিছে ছুটতে হবে? বাড়ী দেখে বিয়ে করে কেনই বা টাকা, যৌতুক, রূপ, অহংকার, চরিত্র হাবি জবি ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে ক্যাচাল করে অতিষ্ট ব্যাতিষ্ট করে ফেলা হয় একটা মেয়ের জীবনকে?

হ্যাঁ! বড় ঘরের মেয়েরা মাছ কেচতে পারে না, শাক কুটতে পারে না, ছোট মাছ বাছতে পারে না, মাছ মাংস কাটতে পারে না, বাটাবাটিও পারে না। কারন তারা বুয়ার ঘরে বুয়া হয়ে জন্মায় নাই। তবুও যদি তারা সব করতে একটু চেষ্টাও করে থাকে তবে তা আপনাদের সাত পুরুষের ভাগ্য।

হ্যাঁ! ধনীর মেয়েরা মিতব্যয়ী হতে পারে না যদিও ব্যতিক্রম থাকে। তাদের কাপর, জুয়েলারী, কসমেটিক, সপিং হাবি জাবিতে একটা মোটা খরচ করতে হয়। যদি কোন ধনীর মেয়ের পেছনে শশুর বাড়ী থেকে বা স্বামীকে এসব খরচ করতে না হয় বা এটা নিয়ে মেয়ে বা তার পরিবারের কেউ কোনদিন কোন টু শব্দ না করে তবে সেটাও আপনার সাত পুরুষের ভাগ্য মনে করবেন। কেননা এমন ধনীর মেয়ে বা পরিবার তো দূরের কথা, কোন সাধারন গরীব ঘরেও এমন নজির পাবেন না। চ্যালেঞ্জ করছি। খুঁজে দেখতে পারেন। কেননা সব পরিবারেই বউদের মিনিমাম কাপড়, কসমেটিক, হাবিজাবি টীন সেটে থাকা গরীব চাষী ঘরেও দেয়া হয় বিয়ে বা ঈদ বা বিশেষ কোন দিনে।

ধনী ঘরের হোক বা যেমনই ঘরের হোক, বর্তমান যুগে মেয়েরা কিন্তু সহজে শশুর বাড়ী থেকে শশুর, শাশুরী, ননদ, দেবর, ভাসুর, তাদের বাচ্চা, পুরা গুষ্টি নিয়ে মিলে মিশে থাকার পক্ষপাতি নয়। সব মেয়ে ও তাদের পরিবারই চায় স্বামী নিয়ে আলাদা নিজের সংসার গড়তে। এমন যুগেও যদি দেখেন কোন মেয়ে আপনার সেই যৌথ পরিবারই চায়, আপনার পরিবারের বাচ্চাদের নিয়ে, সবাইকে নিয়ে সুখী জীবনের স্বপ্ন দেখে, আলাদা হবার সুযোগ আসলেও আপনাকে আলাদা করে নি, বরং নিজেকেই আলাদা করে দিয়েছে আপনাদের ডিমান্ড পূরন করতে, তবে লিখে নেন, সেটাও আপনাদের সাত পুরুষের ভাগ্য। বেটার অপশন পেতে গিয়ে এমন ভাগ্য লাথি মারার মত বোকামী আর হয় না কোন মানুষ বা পরিবারের।

তারপরেও যদি নিজেদের ভাগ্যকে গালাগালি করে এমন মেয়েকেই দোষ দিয়ে ভাগিয়ে দেন বেটার কোন অপশনের আশায় বা কোন স্বার্থের কারনে, নিজের জীবন আবাদ করার লোভে অন্যের জীবন নষ্ট করে, তবে এর থেকে বদনসিবও পাবেন না আপনার সাত পুরুষেও। লিখে দিতে পারি।

আজ হয়তো মনে হবে আপনি জিতে গেছেন। অথচ জীবনের ব্যবসায় এমন লস আর হয় না। বেটার বেটার না করে একবার নিজেদের আত্মাকে শুদ্ধ করুন নিজের অযাচিত ডিমান্ডগুলো দূর করে। লোভ-লালসা দূর করে নিজের মাঝে ন্যায়-নীতি চাষ করুন। দেখবেন, জীবনের ব্যবসায় লালে লাল হয়ে গেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *