কবি হাসনাত নাগাসাকির কবিতা ” যমুনা দুয়ার খোলো “


যমুনা দুয়ার খোলো
– হাসনাত নাগাসাকি
যমুনা দুয়ার খোলো, আমি এসেছি।
আমি তোমার ফেলে আসা পাপ,
ভুলে যাওয়া পাপের স্মৃতি, বিগত প্রেমিক।
অন্ধকারে পা পিছলে -গড়াতে গড়াতে
চলে গেছি সোনামুখি বাজারের দিকে,
চলে গেছি ভুলের দিকে, ভুলের ভুলের দিকে।
ভুল – মানুষকে অন্ধ করে রাখে
ভুল – মানুষকে মুগ্ধতায় বন্দী করে রাখে
ভুল – মানুষকে বারবার নিয়ে যায় সোনামুখি বাজারের দিকে।
আমি জেনেছি, যমুনা,
সোনামুখি বাজারে নেই কোনো সোনা,
ভালবাসা নেই।
সেখানে জোড়ায় জোড়ায় হন্তদন্ত পা, চতুরতায়
তীক্ষ্ণ জোড়া চোখ। সেখানে বনিক ও পতিতা
পরস্পর ভাই বলে সম্বোধন করে পরস্পরকে খেয়ে দিতে চায়।
আমি সেই ভুলের দিকে চলে গেছি, মুনা –
অন্ধকারে পা পিছলে পড়ে – গড়াতে গড়াতে ।
আমি তোমার ফেলে আসা পাপ – দুয়ার খোলো।
যদি না খোলো –
দুয়ারের খিল ভেঙে ঢুকে পড়বো আমি ।
যদি না খোলো –
দুয়ারে দাঁড়িয়ে আমি ডুবে যাবো, মরে যাবো মুনা।
আমি মরলে পৃথিবীতে আর
জন্মাবে না একটিও কবিতার কুঁড়ি ।
বাতাসে মুহূর্তেক ডানা ঝাপটে কবিতারা মরে পড়ে রবে
ছাই ভস্মের ধুসর পৃথিবীতে।
যমুনা, যমুনা, আচমকা সোনামুখি বাজারের
মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে পড়েছে
নর্দমার পচা কালো জল – দুর্গন্ধ ও মড়কের মারি।
সেই জলে ভেসে যাচ্ছে সমস্ত পৃথিবী,
ডুবে যাচ্ছে নগর লোকালয়।
পৃথিবীর বক্ষ অব্দি ডুবে গেছে,
নাক অব্দি ডুবে গেছে পচা কালো জলে।
বাইরে দাঁড়িয়ে আমি – আমিও ডুবে যাচ্ছি –
আমাকে বাঁচাও! আমাকে টেনে তোলো তোমার বক্ষের সমান্তরাল,
বক্ষ খুলে দাও, যমুনা – আমি ঢুকে পড়ি।
আমাদের পাপ ছিলো
পৃথিবীর পবিত্রতা।