3:39 PM, 19 September, 2025

মুরাদনগরে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে রোগীর ভির সামলাচ্ছেন কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীরা

IMG_20200414_164605

মুরাদনগর (কুমিল্লা): গত মাসের ২৪ তারিখ ঢাকা ফেরত গার্মেন্টস কর্মী রফিয়া বেগম দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বোড়ারচর গ্রামে নিজ বাড়িতে চলে এসেছেন। কদিন বাদে হালকা জ্বরে আক্রান্ত হলে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি শুনেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল গুলোতে জ্বরের চিকিৎসা নাকি আপাতত বন্ধ। চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত কেন্দ্র গুলোতেও জ্বরের রোগী দেখছেন না কেউ। অগত্যা বাড়ির পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকে (সিসি) যেতে হয়েছে তাকে। সেখানে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মী (সিএইচসিপি) করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক (সিসি) থেকে প্রাপ্ত চিকিৎসাতেই রফিয়া বেগম সুস্থ্য হয়েছেন।
রফিয়া বেগমকে চিকিৎসা দেওয়া স্বাস্থ্য কর্মী বা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) জানিয়েছেন তাদের জন্য কোনো করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা সামগ্রী এখনো দেওয়া হয়নি। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকলেও কোনো প্রকার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোষাক (পিপিই), গ্লাভস কিংবা মাস্ক কিছুই হাতে পাননি তাঁরা। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত রোগী দেখতে হেেচ্ছ। মৌসুম পরিবর্তনের কারণে আগত রোগীদের বেশিরভাগই জ্বরে আক্রান্ত। এখন এদের মধ্যে কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকে তবুও তার রোগ চিহ্নিত কিংবা চিকিৎসা না দেবার কোন সুযোগ সিএইচসিপিদের নেই। এছাড়া চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজে এবং আরো অনেকে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তো আছেই।
উপজেলায় ৪৪ টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিএইচসিপি মুরাদনগর উপজেলার এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জালার উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট ক্লিনিক ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগীরা আমাদের কাছেই ভিড় করছে চিকিৎসার জন্য। আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগী দেখেছি এখন দেখতে হচ্ছে তার দ্বিগুণ। তিনি আরো জানান,‘এসব রোগীদের বেশিরভাগই জ্বর, কাশি, গলা ব্যাথাসহ করোনার প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে। যেহেতু উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনো কোনো ধরণের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী পাননি তাই নিরুপায় হয়েই ঝুঁকি নিয়ে রোগী দেখছেন তারা।
সিএইচসিপিদের এমন অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ সিএইচসিপিদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আমরাও কনসার্ন। তাদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহের সিদ্ধান্ত আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। শীঘ্রই বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।’ তবে কবে নাগাদ সকল সিএইচসিপি করোনা প্রতিরোধক নিরাপত্তা উপকরণ হাতে পাবে সেটা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *