9:53 PM, 12 November, 2025

৬ দিনে ৫ হাসপাতাল ঘুরেও মেয়েকে ভর্তি করাতে ব্যর্থ বাবা

chittagong-medical-college_1

চট্টগ্রামে ৬ দিনে ৫ হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও অসুস্থ মেয়েকে ভর্তি করাতে পারেননি এক বাবা। ওই স্কুলছাত্রীর নাম সানজিদা ইসলাম সুমাইয়া (১৬)। থাকেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে।

সপ্তাহখানেক আগে সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। গত ২৬ মার্চ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তার পরিবার। সেখানকার এক চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

ওই দিন সন্ধ্যায় সানজিদার অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাৎক্ষণিক এক্স-রে করিয়ে প্রতিবেদন দেখার পর চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তির পরামর্শ দেন। পরে রাত একটার দিকে ওই স্কুলছাত্রীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে মেয়েটিকে সেখান থেকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। তখন রাত তিনটা। সেখান থেকে চট্টগ্রাম সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে যেতে বলা হয়। রাতে ওই হাসপাতালের সেবা বন্ধ থাকে। তাই শুক্রবার সকাল আটটার দিকে মেয়েটিকে চট্টগ্রাম সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেফারেন্স ছাড়া করোনাভাইরাসের টেস্ট করাতে অস্বীকৃতি জানান। পরে একজন চিকিৎসক জ্বরের ওষুধ দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলেন।

এরই মধ্যে অসুস্থ সানজিদার বাবা রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রামের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন ছাড়া কোনো হাসপাতালে রোগী ভর্তি নেয়া হচ্ছে না। কোনো উপায় না পেয়ে অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন বাবা। গত রবি ও সোমবার দুদিন মেয়েকে নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু মেয়ের অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাই ফের মেয়েকে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা শুরু করেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের এক পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে সানজিদার করোনা পরীক্ষা করা হয়। আজ বুধবার পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায় নেগেটিভ, অর্থাৎ মেয়েটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয়।

বুধবার অসুস্থ সানজিদার বাবা রফিকুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে পাঁচটি হাসপাতালে গেলাম, কোনো হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করাতে পারলাম না, চিকিৎসা দিতে পারলাম না। বিষয়টা দুঃখজনক। অথচ মেয়েটির করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ।’

উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ওই রোগীর বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে বলেছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাজীব বলেন, ‘রোগী হাসপাতালে এসেছিল। তেমন সমস্যা না। তাকে আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছিলাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *