8:00 AM, 13 November, 2025

পঞ্চগড়ে জীবিত উদ্ধার হলো বিরল প্রজাতির ‘কোরাল কুকরি’

রেড কোরাল কুকরি। এটি বিরল প্রজাতির একটি সাপ। উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস (Oligodon Kheriennsis)। গত তিন মাসে দেশে পাঁচ বার দেখে মিলেছে এ সাপের। পাঁচ বারেই দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। এর আগে পুরো পৃথিবীতে মাত্র ২০-২২ বার এ সাপের দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে।
রোববার রাতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ মোটাপাড়া এলাকার একটি রাস্তা থেকে পঞ্চম বারের মত জীবিত অবস্থায় এই সাপ উদ্ধার করেন বণ্য প্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম (বিএসএস)। সোমবার দিনের বেলা সাপটি অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারী সহিদুল।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়রা সাপটিকে দেখতে পেয়ে না মেরে আটক করেন এবং আমাকে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করি।’
সহিদুল আরো বলেন, ‘ইতোমধ্যে এই সাপটি বাংলাদেশে রেকর্ডসহ আন্তর্জাতিক গবেষণা পত্রে প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ এখন মোটামুটি ভাবে সচেতন হয়েছে, সাপ দেখলে না মেরে উদ্ধারকারীকে ফোন দিচ্ছে।’
এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় পঞ্চগড়ে তথা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম বারের মত উদ্ধার হয় এই সাপ। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকা থেকে দ্বিতীয় বারের মত মৃত অবস্থায়, ২০ এপ্রিল টুনিরহাট এলাকা থেকে তৃতীয় বারের মত জীবিত এবং ১০ মে একই এলাকা থেকে চতুর্থ বারের মত মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়।
জানা গেছে, ১৯৩৬ সালে উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এই সাপ আবিষ্কৃত হয়। উজ্জ্বল কমলা ও লাল প্রবাল বর্ণের এই সাপটি অত্যন্ত মোহনীয়। লাল প্রবাল সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। এই সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এটি দেখা যায়। সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ যার সাহায্যে মাটি খনন করে। এ সাপটি পূর্ণ বিষধর হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *