6:56 AM, 13 November, 2025

নিউজিল্যান্ড কি আসলেই হেরেছে ?

new-zealand-vs-england

স্পোর্টস ডেস্কঃ শেষ হলো ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশতম আসর। পরিসংখ্যানে লেখা থাকবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড। আর ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু কথা হলো আসলেই কি হেরেছে নিউজিল্যান্ড? এই কথা কেউই মানবে না। কিন্তু ওই যে, পরিসংখ্যান বলবে হেরেছে নিউজিল্যান্ড…। আর এখানেই কথা থেকে যায়। পরিসংখ্যানই সব না।

১০০ ওভার খেলা হলো। দুই দলই সমানে সমান লড়ে গেলেন। ফলাফল নির্ধারন না হওয়াতে সুপার ওভারে খেলা গড়ালো। সেখানেও সমানে সমানে! কেউ যদি বলেন এটা নাটুকে ম্যাচ তাহলে ভুল হবে। নাটক-সিনেমার টুইষ্টকেও হার মানিয়েছে। সুপার ওভারে ব্যাট করতে নেমে ১৫ রান করে ইংল্যান্ড। পরে নিউজিল্যান্ড ১৬ রানের টার্গেট নিয়ে নেমে ১৫ রান তুলতে পারে। ম্যাচ টাই! আর এর পরই এমন লড়াকু ম্যাচে সামনে চলে এলো অদ্ভুত এক নিয়ম। পুরো ম্যাচে বাউন্ডারির হিসেবে বিজয়ী হয় ইংল্যান্ড! মোট ২৪টি বাউন্ডারি মেরেছে ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ড মেরেছে ১৬টি। ব্যাস ইংল্যান্ড জয়ী।

এই পদ্ধতির সমালোচনা করেছেন সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ক্রীড়া সাংবাদিকরা। প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন এই পদ্ধতিকে। অনেকেই মানতে পারছেন না কি করে এমন একটা পদ্ধতিতে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হতে পারে। একে বাজে নিয়ম বলে এটা বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন অনেকে। সমবেদনা প্রকাশ করেছেন নিউজিল্যান্ড টিমের জন্যও।

খ্যাতনামা ক্রিকেট সংবাদকর্মী ব্রেইডন কভারডেল টুইট করেন, ‘বিশ্বকাপের নিষ্পত্তি হলো তাহলে অযৌক্তিক নিয়মের ওপর ভিত্তি করে। উইকেটের থেকে তাহলে বাউন্ডারি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এরপর আমাকে আর কখনো বলবেন না, এটা ব্যাটসম্যানদের খেলা নয়।’

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ডিন জোন্স টুইট করেন, ‘ডি/এল মেথড রান ও উইকেট হারানোর ওপর ভিত্তি করে বানানো। কিন্তু এখনো চূড়ান্ত ফল নির্ধারিত হলো বাউন্ডারিসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। আমার মতে, এটি ঠিক হয়নি।’

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ব্রেট লি যেমন টুইট করেন, ‘ইংল্যান্ডকে অভিনন্দন। দুর্ভাগ্যের জন্য নিউজিল্যান্ডকে সমবেদনা। এটা বলতেই হবে বিজয়ী বেছে নিতে এটা খুব বাজে একটা পদ্ধতি। এ নিয়ম পাল্টাতেই হবে।’

ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ ও সংবাদকর্মী রজনীশ গুপ্ত টুইট করেন, ‘সুপার ওভারে টাই হলে বাউন্ডারিসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে জয়ী নির্ধারণ কখনো পছন্দ হয়নি। যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন করলে এটা বেশি ভালো হতো। এ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত কেউ হারেনি।’

যুবরাজ সিং লিখেছেন, ‘আমি এই নিয়ম মানি না! কিন্তু নিয়ম তো নিয়মই, অভিনন্দন ইংল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জয়ের জন্য, আমার হৃদয় কিউইদের জন্য, যারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন।’

শুধু ক্রিকেটার কিংবা ক্রীড়া সাংবাদিকরাই নয় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারন দর্শকরা। একদিকে মহাকাব্যিক এক ফাইনাল দেখার রোমাঞ্চকর অনুভূতি প্রকাশ অন্যদিকে আইসিসির এই বিজয়ী ঘোষণার পদ্ধতির সমালোচনায় মুখর সোস্যাল নেটওয়ার্কিং মাধ্যমগুলো। সে যেটাই হোক দিন শেষে শিরোপা জয়ীদের পাশে লেখা থাকবে ইংল্যান্ডের নামই। সেখানে কোথাও লেখা থাকবে না সেই ম্যাচে আসলে হারেনি নিউজিল্যান্ডও!