মোঃ আলী আকবর রনী,
ক্রিড়া প্রতিবেদক:
প্রতিটি খেলোয়ারই তাদের যোগ্যতা দিয়ে জাতীয় দলে প্রবেশ করে। তারা তাদের সেরা খেলা উপহার দিয়ে নির্বাচকদের মন জয় এবং আস্থা অর্জন করে জাতীয় দলের জন্য নির্বাচিত হয়।
মোস্তাফিজ তেমনী একজন বোলার। যার শুরুটা ছিল এক স্বপ্নের মতো। কেন যেন মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজ আমাদের সু-স্বপ্নকে বাস্তবে প্রকাশ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এর জন্য দায়ী কে?
জাতীয় দলের যারা কোচিং স্টাফ আছেন তাদের কর্ম কী? তারা আমাদের জাতীয় দলকে যারা প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের ভূল-ত্রূটি, সমস্যা সমাধান করাই তাদের দায়িত্ব। একটু ভেবে দেখা যায়।
হিথ স্টিক থাকা অবস্থায় আমাদের বোলিং সেক্টরটি কতটা উন্নত করছিল তা আমাদের দেখার জন্য খালি চোখই যথেষ্ট ছিল। দেখা যা বিগত বছরগুলো আমাদের পেস বলারগুলোর অবস্থা ছন্নছাড়া হয়ে রয়েছে।
কোর্টনি ওয়ালস্ বিশ্বের সেরা বোলারদের একজন তার কোন সংশয় নেই। একজন সেরা বোলারই সবসময় সেরা কোচ হবে, তা কখনো কখনো সঠিক নয়।
মোস্তাফিজ যেন দিনে দিনে একজন সাধারণ বোলারে পরিণত হচ্ছে। তার কোথায় সমস্যা হচ্ছে, কি জন্য তার স্বাভাবিক বোলিংএ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তা সকল কিছুর তদারকি করার দায়িত্ব আমাদের বোলিং কোচের। কিন্তু শুধু আমার নয়, বাংলাদেশের সকল ক্রিকেট প্রেমীদের এক কথায় বলতে পারবেন ওয়ালস্ কি কাজ করছে তার কোন প্রভাব বা তার বাস্তবায়ন কি হচ্ছে তা আমাদের বধোগম্য নয়।
ক্রিকেট বোর্ডের উচিত একবার হলে দেশের স্বার্থের দিকে বিবেচনা করে, একটু ভেবে দেখা। অনেক পরিশ্রমের ফলে একজন ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করে। আর সে যদি অল্পতেই হারিয়ে যায়, তাহলে ক্ষতিটা কিন্তু বাংলাদেশেরই হবে।
বিগত বছরগুলোতে ঠিক এমনই হচ্ছে। অনেক প্রতিভাবান খেলোয়র জড়ে যাচ্ছে, তাদের নিয়ে কোন রকম পরিকল্পনা কি বিসিবি করেছে? আমার জানা নেই।
একটু খেয়াল করে দেখবেন, সাকলাইন মোস্তাক যখন আমাদের স্পিন বোলার কোচ ছিল, তখন আমাদের স্পিনারদের উন্নতি আমাদের চোখে পড়ার মতো ছিল। তখন সোহাগ গাজী বলতে বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের নাকানি চুবানি দিয়ে ছিল।
বর্তমানে আমাদের ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট এর উন্নতি চোখে পড়ার মতো, এখন আমরা যে কোন রানকে চেজ করার জন্য প্রস্তুত থাকি, তার কারণ একজন সঠিক দিক নির্দেশক আছে, আর সে হলো “নেইল ম্যাকেঞ্জী”। গত মাসে যখন আমার আয়ারল্যান্ডে সাথে প্রথম ম্যাচ বাজে ভাবে হেরে যাই, তখন মেকেঞ্জি বলেছিলেন। আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে ভয় বা এর কোন দায় দিলে চলবে না, যার যে সামর্থ্য আছে সেভাবেই তাকে খেলতে হবে, পরবর্তী ম্যাচগুলোতে তার প্রতিফলন ছিল আমাদের প্রতিটি খেলোয়ার এর ব্যাটিং এ। আর সেই সুবাদে আমরা দীর্ঘ ছয়টি ফাইনালে হেরে সপ্তম ফাইনালে ওয়েস্ট উইন্ডিজ পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করি।
আমাদের প্রতিটি খেলোয়ার এক একটি সম্পদ। অতএব এই সম্পদগুলোকে আমার নষ্ট বা হারিয়ে দিতে পারিনা। বিসিবি একবার হলে ভাবতে হবে, কারণ ক্রিকেট আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উৎসবের একটি অংশ, এই ক্রিকেট দিয়েই আমরা দুঃখের মাঝেও হাঁসতে শিখেছি। খেলোয়ারদের বিভিন্ন সাফল্যে আমাদের আনন্দ করার সুযোগ দিয়েছে।
আমাদের এখনই সময় এসেছে আমাদের সেরা বোলারগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই তাদের নিয়ে সঠিক কর্ম-পরিচালনা করে তাদের সমস্যাগুলো সমধান করার। যাতে করে তারা হারিয়ে না তালহা যুবায়ের, আল-আমিনদের মতো করে।
বিসিবি যদি সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন, হয়তো দেখা যাবে একদিন আমাদের প্রতিভা ঝড়তে ঝড়তে নিঃশ্বেস হয়ে গেছে। তাই বিসিবির কাছে আবদন করবো, কোচিং স্টাফ নির্ধারণ করতে সেরা খেলোয়ার বিবেচনা না করে অক্ষত খেলোয়ার হোক কিন্তু কোচিং প্রতিভা দেখে নির্বাচন করার।
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম