জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগাদের বিশাল জয়
জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করলো বাংলাদেশের টাইগাররা। ওয়ানডে ক্রিকেটে রানের বিচারে এটাই সর্বোচ্চ রানে বাংলাদেশের জয়। এর আগে ২০১৮ সালে মিরপুরে শ্রীলংকাকে সর্বোচ্চ ১৬৩ রানের ব্যবধানে হারিয়েছিল মাশরাফিরা।
১ মার্চ, রবিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩২১ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
বিশাল টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ৩৯.১ ওভারে ১৫২ রানে অলআউট হয় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। এতে করে ১৬৯ রানে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় টাইগাররা।
এর টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন লিটন দাস। ৪৩ বল খেলে ২৩ রান করে আউট হন তামিম।
এরপর তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে ৮০ রানের জুটি গড়েন লিটন। ৩৮ বলে ২৯ রান করে শান্ত আউট হলেও উইকেটে অবিচল ছিলেন ওপেনার লিটন। চার নাম্বারে ব্যাটিংয়ে নামা মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ফের ৪২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ২৬ বলে ১৯ রান করে আউট হয়ে ফেরেন মুশফিক।
ইনিংসের শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন লিটন। এরপর ১২৬ রানের ইনিংস খেলার পর পেশিতে টান লেগে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার ইনিংসটি ১০৫ বলে ১৩টি চার ও ২ ছক্কায় সাজানো।
সাত নাম্বারে ব্যাটিংয়ে নামা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে তারা গড়েন ৬৮ রানের জুটি। ২৮ বলে ৩২ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ৪১ বলে ৫টি চার ও এক ছক্কায় ফিফটি তুলে নেয়ার পর সেই ক্রিস এমপোফুর বলে এলবিডব্লিউ হন মিঠুন। ৪ বলে ৭ রানে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারে এমপোফুর বলে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে ২২ রান আদায় করে নেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন।
এরপর ৩২২ রানের পাহাড়সম টার্গেট নিয়ে ব্যটিংয়ে নেমে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। খেলার ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই জিম্বাবুয়ের ওপেনার তিনেশে কামুনহুকওয়ের উইকেট তুলে নেন সাইফ। তার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন জিম্বাবুয়ের এ ওপেনার। ১.৪ ওভারে ১ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
দলীয় ২৩ রানে সাইফউদ্দিনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন রেগিস চাকাভা। ওপেনিংয়ে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক চামু বিবাভাকে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। চিবাভার বিদায়ে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে এক ঘরে হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
এ বিপর্যয়ে দলের হাল ধরতে পারেননি জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর। ইনিংসের ১৪তম আর নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক টেলরের উইকেট তুলে নেন তাইজুল ইসলাম। টেলরের বিদায়ে ১৩.২ ওভারে ৪৪ রানে টপ অর্ডার ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে একঘরে হয়ে যায় সফরকারীরা।
এরপর দ্রুতই সময়ে সিকান্দার রাজা, ওয়েসলি মাধেভার, রিচমন্ড মুতুম্বামী, ডোনাল্ড ত্রিপানো ও টিনোতেন্ডা মুতুমবাজিকে আউট করেন টাইগার বোলারা। সময়ের ব্যবধানে উইকেটে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৯.১ ওভারে ১৫২ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩২১/৬ (লিটন ১২৬, মিঠুন ৫০, মাহমুদউল্লাহ ৩২, নাজমুল হোসেন শান্ত ২৯, সাইফউদ্দিন ২৮*, তামিম ২৪, মুশফিক ১৯, মিরাজ ৭)।
জিম্বাবুয়ে: ৩৯.১ ওভারে ১৫২/১০ (মাধেভার ৩৫, সিকান্দার ১৮, মুতুম্বামী ১৭, সাইফউদ্দিন ৩/২২, মিরাজ২/৩৩, মাশরাফি ২/৩৫)।
