ক্রিড়া প্রতিবেদক: মোঃ আলী আকবর রনী
রহমতগঞ্জ ক্লাবের ইতিহাসের এই প্রথম কোন টুর্নামেন্ট এর ফাইনালে উত্তীর্ণ
হলো কোচ জিলানীর মাধ্যমে। তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে দারুন খেলা উপহার দিয়েছে এবারের ফেডারেশন কাপে। কিন্তু গোলরক্ষক এর শিশুসূলভ ভূলে ইতিহাস গড়া থেকে বঞ্চিত হলো পুরান ঢাকা ঐতিহ্যবাহী দলটি।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ২-১ গোলে রহমতগঞ্জ কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। গতবার ফেডারেশন কাপ ফাইনালে আবাহনী লিমিটেডের কাছে হেরে রানার্সআপ হওয়ার দুঃখে এবার প্রলেপ দিল অস্কার ব্রূজনের কিংস।
ফেডারেশন কাপ ফুটবলে এবার পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন। এর আগে আবাহনী, মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র-এই ছয় দলের আছে এক বা একাধিকবার এ শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা ছিল।
খেলার প্রথম থেকেই বসুন্ধরা কিংস, রহমতগঞ্জ মুসলিম এফসির উপর প্রভাব বিস্তার করে খেলতে থাকে। খেলার ২ মিনিটের মাথায় মতিন মিয়ার দুর্দ্যান্ত আক্রমনের উঠে বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের অগোছালোতে প্রথম সুযোগটি নষ্ট করে। বসুন্ধরা কিংস একাধিক আক্রমন করেও গোল বঞ্চিত হচ্ছিল, সঠিক ফিনিসিং এর জন্য। কিংস এর আক্রমন যেন ডি-বক্সের মধ্যেই এসে তালগোল পেচিয়ে যাচ্ছিল।
খেলার ১৬ মিনিটের সহজ একটি সুযোগ নষ্ট করে রহমতগঞ্জ এফসি, উজবেকিস্তানের তুরায়েভ আকোবিরের আড়াআড়ি ক্রস ধরে সুহেল মিয়া মারেন আনিসুর রহমান জিকোর গায়ে। এরপর আকোবিরের হেডও হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।
৪০তম মিনিটে কিরগিজস্তানের ডিফেন্ডার আকপোপভ আসরোরভ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পরের মিনিটেই গোল হজম করে রহমতগঞ্জ। ডান দিক থেকে বিশ্বনাথ ঘোষের বাড়ানো ক্রসে হেডে জাল খুঁজে নেন কোস্টারিকার ফরোয়ার্ড বিশ্বকাপ খেলা খেলোয়ার কলিন্ড্রেস।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়াতে রহমতগঞ্জের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে বসুন্ধরা। ৫৮তম মিনিটে দুইশবেকভের প্রচেষ্টা পোস্টে লেগে ফিরে।
খেলার ধারার বিপরীতে ৬৩তম মিনিটে সমতায় ফেরে আবাহনী ও মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে ফাইনালে উঠে আসা রহমতগঞ্জ। শাহেদুল আলমের কর্নারে গাম্বিয়ার ফরোয়ার্ড মোমোদু বাহর হেডে পরাস্ত হন জিকো। খেলায় ১-১ গোলে সমতায় ফিরে যেন অন্যএক রহমতগঞ্জ কে দেখা গেল মাঠে। তাদের খেলার গতি বেড়ে যায়।
বসুন্ধরা কিংস ১-১ গোলে সমতায় আসার পর তাদের খেলা গুছিয়ে আবার নতুন করে আক্রমনের পসরা সাজিয়ে খেলতে থাকে দ্বিতীয়ার্ধের গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটনের দৃঢ়তায় বেঁচে যায় রহমতগঞ্জ। মতিনের ক্রসে মাহবুবুর রহমান সুফিলের শট লিটন ফেরানোর পর সোলেরার প্রচেষ্টা জটলার মধ্যে আটকে যায়।
কিন্তু ৭১তম মিনিটে লিটনেরই শিশুসুলভ হাস্যকর ভুলে এগিয়ে যায় প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা। সতীর্থের ব্যাক পাস বিপদমুক্ত না করে সময় নষ্ট করেন গোলরক্ষক, দ্রুত দৌড়ে এসে বল ছিনিয়ে নিয়ে ফাঁকা পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন কিংস অধিনায়ক কলিন্ড্রেস। দলের এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করে কিংসদের ২-১ গোলে এগিয়ে দেয়। নির্ধারিত সময় আর কোন গোল না হওয়ায় ফেডারেশন কাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম লেখায় বসুন্ধরা কিংস।
এবারের ফেডারেশন কাপ টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়ার বাছাই বোর্ডের নিয়মিত তিন এএফসি এবং বাফুফের তিন কোচ, আলতাফ হোসেন, মানিক এবং আবুল হোসেন নির্ধারণ করেন। তাদের জুড়ি বোর্ডের সিদ্ধান্ত হিসেবে, ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল কিংসের খেলোয়ার “বিশ্বনাথ গোষ” এবং টুর্নামেন্ট সেরা হন কিংস অধিনায়ক “কলিন্ড্রেস”। টুর্নামেন্ট এর সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ৪ গোল করে পুরস্কার জিতেন আরেক নবাগত দল পুলিশ এফসির আমেরিকান রিক্রূট ‘‘সিডনি রেভেইরা”।
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম