নতুন দুই দাবি যুক্ত করে বিসিবিতে ক্রিকেটারদের চিঠি

এগারো দফা দাবির সঙ্গে যোগ হলো আরও দুটি-মোট ১৩ দফা দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে আন্দোলনরত দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা।
মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি মাঠে গত সোমবার প্রায় ৬০ জন ক্রিকেটারকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন সাকিব আল হাসান। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এক সুদীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের এই আন্দোলকে বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্র, দেশের ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
তারই জবাবে বুধবার গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হিসেবে ব্যারিস্টার মুস্তাফিজ রহমান দাবিগুলো তুলে ধরেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে পারিশ্রমিক বাড়ানো, ক্রিকেটারদের প্রতি বোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো সহ মোট ১১টি দাবি জানিয়েছিল তারা। যোগ হওয়া দুটি দাবির একটি হলো বোর্ডের রাজস্বের ভাগ দিতে হবে ক্রিকেটারদের এবং নারী ক্রিকেট দলকেও দিতে হবে ন্যায্য ভাগ।
তবে এখনই কোনো আইনী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না জানিয়ে মুস্তাফিজ জানান, বোর্ডের সঙ্গে বসতে প্রস্তুত ক্রিকেটাররা।
ক্রিকেটারদের ১৩ দফা দাবি হলো :
১. ক্রিকেটারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সরাসরি পদত্যাগ করতে হবে। সংগঠনটির স্বাধীনতার জন্য এমন সিদ্ধান্ত মানতে হবে।
২. প্রফেশনাল ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশন থাকবে যার একটা প্রসেস থাকবে যেখানে শুধু খেলোয়াররা থাকতে পারবে। ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম এই ধরনের ক্রিকেট সংগঠন গড়ে ওঠে যেটা ক্রিকেটারদের স্বার্থ দেখবে। আমাদের দেশেরও সেরকম প্রতিষ্ঠান দরকার।
৩. ঢাকার যত লিগ আছে তা পূর্বের নিয়মে চলতে হবে। প্লেয়ার্স বাই চয়েস নিয়মে ফেরত যেতে হবে। ক্রিকেটাররা এমনভাবে খেলতে আগ্রহী। বিপিএলও একইভাবে চলতে হবে। আগের মত চলতে হবে। বিপিএলে দেশী বিদেশীদের মধ্যে মূল্যের তারতম্য রাখা যাবে না।
৪. প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ফি কমপক্ষে এক লাখ টাকা থাকতে হবে।
৫. সারা বছর কোচ, ফিজিও নিয়োগ রাখতে হবে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে।
৬. ন্যাশনাল টিমের কন্ট্রাকটেড প্লেয়ারদের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ জন হতে হবে।
৭. লোকাল স্টাফ, কোচ, গ্রাউন্ডসম্যানদের বেতন অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের মত সমমানের হতে হবে।
৮. অতিরিক্ত দেশিয়দের জন্য টি টোয়েন্টি লিগের আয়োজন করতে হবে।
৯. বছরজুড়ে ক্রিকেট সূচি থাকতে হবে এবং সেটা একইরকমভাবে থাকতে হবে। কোনরকম ভঙ্গ করা যাবে না।
১০. প্লেয়ারদের সব পাওনা সময়মতো পরিশোধ করতে হবে। এবং সিজনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
১১. দুটির বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে দিতে হবে। কোন রেষ্ট্রিকশন রাখা যাবে না। জাতীয় পর্যায়ের খেলা ছাড়া কোনো সময় নিষেধ করা যাবে না।
১২. বিসিবির যে রেভিনিউ থাকবে তার একটা অংশ ক্রিকেটারদের দিতে হবে। ভারতের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে কমার্শিয়াল হতে হবে।
১৩. বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও একইরকম সুবিধা প্রদান করতে হবে ঠিক যেমনটা ছেলেরা সুবিধা পেয়ে থাকে।
এদিকে ক্রিকেটারদের জন্য মিরপুর হোম অব ক্রিকেট শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অপেক্ষা করছেন বিসিবি কর্মকর্তারা। বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ধর্মঘট ডাকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে তারা বসতে রাজি আছেন। অপেক্ষা করছেন তারা। তবে জানা গেছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিসিবির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ধর্মঘটরত ক্রিকেটাররা।
