
মুখোমুখি ২৪ ম্যাচের পরিসংখ্যানে ভারতের জয় ১১টি, বাংলাদেশের ৩টি। বাকি ১০ ম্যাচ ড্র। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ জয়ের স্বাদ বাংলাদেশ পেয়েছিল ২০০৩ সালে, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। এরপর পেরিয়ে গেছে ১৬টি বছর! ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারত এখন ১০৪তম, বাংলাদেশ ১৮৭তম।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে ভারতের শুরুটা ওমানের কাছে হেরে। তবে পরের ম্যাচে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন কাতারকে রুখে দেয় ইগর ইস্তিমাচের দল। এবার উন্মুখ হয়ে আছে বাছাইয়ে প্রথম জয়ের জন্য।
অন্যদিকে, প্রথম দুই ম্যাচে আফগানিস্তান ও কাতারের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। ‘ই’ গ্রুপে এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে পয়েন্টের খাতায় আঁচড় কাঁটতে পারেনি তারা। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ দুই মুখোমুখি লড়াইয়ের ফল অবশ্য আশা দেখায়। ১-১ ও ২-২। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে মিলবে কাঙ্ক্ষিত পয়েন্ট।
ভারতের অভিজ্ঞ গোলমেশিন সুনীল ছেত্রী, তরুণ আশিক কুরুনিয়ান-মানবীর সিংদের নিয়ে ভারত কোচ কষছেন আক্রমণাত্মক ছক। তবে কাতার ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স দেখে সতর্ক এই ক্রোয়াট।
গত বছর মে মাসে জেমি ডে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলছে। ভারত ম্যাচের কৌশল নিয়ে ওঠা সব প্রশ্নে মুখে ছিপি এই ইংলিশ কোচের। সেরা একাদশ তো দূরের কথা, রক্ষণে রায়হান হাসান নাকি বিশ্বনাথ ঘোষ-এ প্রশ্নের উত্তরেও বললেন, "এখনও জানি না"। পয়েন্ট পাওয়ার লক্ষ্য পূরণে কোচের চাওয়া রক্ষণ থাকতে হবে জমাট, গোল খাওয়া যাবে না এবং সুযোগ পেলে কাজে লাগাতে হবে। ইয়াসিন খান, রহমত মিয়াদের ওপর ভার থাকবে সুনীলকে বোতলবন্দী করে রাখার। কাতারের বিপক্ষে অসুস্থতার কারণে না খেলা ভারতের সর্বোচ্চ গোলদাতা ফিরছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে।
বাংলাদেশের কড়া পাহারায় থাকা নিয়ে মোটেও ভাবছেন না ৩৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। বরং মজা বরে বললেন, “যদি তাদের ৪/৫ জন আমাকে পাহারায় রাখে, আমি খুশি হব। আমরা একসঙ্গে চাও খেতে পারি! ওরা যদি এটাই করে, তাহলে আমরা সংখ্যার দিক থেকে সুবিধা পাব, মাঠে ১০ বনাম ৬ থাকবে।”
ওমানের বিপক্ষে সুনীলের গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল ভারত। শেষ দিকে জোড়া গোল হজম করে হারে তারা। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামালের মনে হচ্ছে প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগের শক্তির চেয়ে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভর করবে ম্যাচের ভাগ্য।
“আমি মনে করি, যারা মাঝমাঠে ভালো করবে, এগিয়ে থাকবে, তাদের ম্যাচে ভালো করার এবং জয়ের সুযোগ তুলনামূলকভাবে বেশি থাকবে। কারণ সুযোগগুলো মাঝমাঠ থেকেই তৈরি হয়।”
দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশের স্কোরিং সমস্যা। গত কাতার ম্যাচে তার সবচেয়ে বড় প্রমান ছিল, প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৫টি ওনটার্গেট শট করে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশী খেলোয়াররা। প্রীতি ম্যাচে ভুটানের জালে জোড়া গোল করে খরা কাঁটানো নাবীব নেওয়াজ জীবন সবশেষ কাতার ম্যাচে সুযোগ নষ্ট করেছেন। ব্যর্থতার মিছিলে ছিলেন বিপলু আহমেদ, মাহবুবুর রহমান সুফিলরাও। তবে ভারতের বিপক্ষে সতীর্থ ফরোয়ার্ডদের সুযোগ আছে বলে মনে করেন জামাল।
সল্টটেক এই মাঠে জামাল ছাড়াও ইয়াসিন, মামুনুল, সোহেল রানাদের খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে অধিনায়ক বুঝিয়ে দিলেন মাঠে নামলে গ্যালারির শোরগোল কানে ওঠে না। সমর্থকের চাপ থাকবে ভারতের ওপর, বললেন এমনটাও।
“আমি শুধু সতীর্থদের বলতে চাই, মাঠে যাও, উপভোগ করো। কেননা এত দর্শকের সামনে তোমরা খেলার সুযোগ খুবই কম পাবে। স্রেফ মাঠে যাও, মুহূর্তটা উপভোগ করো এবং ভারতের মতো ভালো একটি দলের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট নিয়ে এসো।”
ভারত যেমনি তাকিয়ে আছে সলটেক এর এই মাঠের দিকে তেমনী বাংলাদেশের সকল ফুটবল প্রেমীদের চোখ থাকবে আজ এই স্টেডিয়ামের দিকে। মাঠে উপস্থিত না থাকতে পারলে ঠিকই চোখ থাকবে টিভি পর্দায়।
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম