কামরুজ্জামান বাবুঃ
একের আসলে যতোটা কাজ, তাতে কেউ অনায়াসেই ঘরে এসে খানিকটা আলসেমি করে সময় নামের সবচেয়ে অমূল্য যক্ষধণ বলি দেয়। তার খারাপ লাগে না বরং আলসেমির উপর তখনই ভীষণ রাগ লাগে যখন আলসেমি ভাব কেটে গিয়ে নিরুপায় মানসপটে জীবন সুন্দরভাবে যাপিত হবার ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছার জানা কিংবা অজানা ঘোরে করতেই হবে- এমন কায়িক শ্রমের কথা মনে করিয়ে ক্লান্তিকে ভেতরে এনে অযথাই আপ্যায়ন করে ব্যর্থতা। ব্যর্থতাকে নিজের অপারগতা ঢাকতে বিচ্ছরি কিছু গালি দিয়ে বলতে চায় ঘেন্নার চরম মাত্রায়- ধুর হারামী, তোর থাকতে ইচ্ছে করে এখনো?
আবার কেউ ঘরকে মন্দির বলে, মসজিদ বলে কিংবা গির্জা বলে- বুকটা তখন নৌকো হয়ে যায় খুশিতে ভাসবে বলে। এই খুশি হওয়ায় এমন কিছু মন্দের বাস নেই। কিন্তু তার ভাবনার মন্দির, মসজিদ কিংবা গির্জা যখন শশ্মান,কবর কিংবা সমাধির রূপ নিয়ে এক কালের স্বপ্নদেখা বড় বড় চোখের সামনে প্রাণহীন সমস্ত কিছু তরঙ্গায়িত হয়,তখন নিজেকে এতো তুচ্ছ মনে হয়, যেনো বলতে চায় ঘেন্নার চরম মাত্রায় - ধুর হারামী, তোর থাকতে ইচ্ছে করে এখনো?
অপরের স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ দান যখন নিজের অজান্তেই,অবোধ প্রাণ একের চাহিদায় অক্ষমতার মানচিত্র আঁকে তার ভেতর, যার সমস্ত মানচিত্রপট জুড়ে জলে,স্থলে মোদ্দাকথা যেখানেই হোক না কেনো-চিহ্ন রয়ে যায় পুরোটায়।নত হয়না শুধুই মাথা, নত হয় জীবন। যখন অবোধ প্রাণ শান্ত হয় অন্য কারো অক্ষাংশ অথবা দ্রাঘিমাংশে অবতীর্ন কোন অবতারের, তখন যদিও নিচু মাথা কিছুটা উচিয়ে চলে, ভাবতে ভালো লাগে- হয়েছে তো। আর কি? কিন্তু অবতার যখন কথায় কথায় বর দেবার কথা মনে করিয়ে দেয়,তখন নিজেকে মৃত মনে হলেও ভাবে ঘেন্নার চরম মাত্রায়- ধুর হারামী, তোর থাকতে ইচ্ছে করে এখনো?
অযতনে দুর্গম রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা গুল্মের শরীর প্যাঁচালো স্বর্ণলতিকা, কোন এক সময় গুল্মের কাছে চাঁদের আলোর, অমাবস্যার আঁধারের,দ্বিপ্রহরের তীক্ষ্ণ আলোর, গোধূলি লগ্নের কথা ছাড়া আরও কত কথা শুনে যেতো একাধারে নবরঙিন মেজাজে। আজ আর এমনটা হয় না। সে গুল্মের শরীর পুরোটাই ঢেকে ফেলে ব্যাঙ্গ করে, তখন গুল্মের শরীরে একাকীত্ব নামের ভ্রুণ জন্ম নেয়, যার সাথেও কিছুতেই কিছু স্পষ্ট করে বলা যায় না যে, গুল্মের শরীর এক ধরণের আত্মার ধারক, আত্মারও খোরাক বলে কিছু আছে- নবরঙিন মেজাজী স্বর্ণলতিকারও শোনার কোন সময়, ইচ্ছে-অনিচ্ছে, শব্দহীন মহাকাব্যপাঠ শোনার, তখন আক্ষেপ এসে খোঁচা দিলেও একটা প্রক্ষেপক ঘেন্নার চরম মাত্রায় শব্দ করে বলে- ধুর হারামী, তোর থাকতে ইচ্ছে করে এখনো?
নিরুপায় মানসপটে জীবন সুন্দরভাবে যাপিত হবার ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছার জানা কিংবা অজানা ঘোর, কারো ভাবনার মন্দির, মসজিদ কিংবা গির্জা, অক্ষাংশ অথবা দ্রাঘিমাংশে অবতীর্ন কোন অবতার, গুল্মের শরীরে একাকীত্ব নামের ভ্রুণ জন্ম যতোই হোক, বলাটা আজও থামে না নিস্তরঙ্গ জলের কোন জলাধারের ঘেন্নার চরম মাত্রায়- ধুর হারামী, তোর থাকতে ইচ্ছে করে এখনো?
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম