“আমি মনে করি কোডিং নির্ভরই হবে আগামীর বিশ্ব”


আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিকে কোডিং ও প্রোগ্রামিং যুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও ২০১৬ সাল থেকেই আমাদের স্কুলে শেখানো হয় প্রোগ্রামিং।
সারাদেশের শিশুদের মধ্যে কোডিংয়ে প্রথম হয়ে এখন অন্যদের শেখাচ্ছি। আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছি এখন, চার বছর বয়সে আমার কম্পিউটারে হাতেখড়ি হয় বাড়িতেই।
কার্টুন দেখার জন্যই কম্পিউটার শিখেছিলাম তখন। এরপর ধীরে ধীরে এমএস ওয়ার্ডে লেখা শিখি। কোডিং শুরু করি ২০১৬ সালে, ৮ বছর বয়সে। তখন আমি তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আমাদের স্কুলে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের কোডিং শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। বার্ষিক পরীক্ষার আগে হওয়ার খুব কম শিক্ষার্থীর অভিভাবকই তাদের ছেলে-মেয়েকে কোডিং শেখাতে রাজি হন। মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় আমাদের কোডিং ক্লাস।
২০১৭ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় ‘জাতীয় শিশু কোডিং ফেস্ট -২০১৭’। প্রতিযোগিতার আগে মাত্র ছয় থেকে আটটি ক্লাস করেছিলাম আমরা। প্রতিযোগিতায় আমি একটি গাণিতিক প্রশ্নের গেম তৈরি করি, নাম দেই ব্রেইন গেম। গেমটিতে বিভিন্ন গাণিতিক প্রশ্ন করা হয় এবং খেলোয়াড়কে দিতে হয় উত্তর। উত্তর সঠিক হলে পাওয়া যায় ধন্যবাদ এবং একটি করে পয়েন্ট।
গেমটি তৈরি করে আমি সারাদেশে প্রথম হই।আমি ছাড়াও আমাদের স্কুলের আরও দুইজন শিক্ষার্থী ছিল সেরা দশে। সেই বছরই কোরিয়া থেকে একটি দল আসে আমাদের সাথে কথা বলতে, কিছু শেখাতে। এরপর ছয়টি দেশের প্রশিক্ষকরা আসেন আমাদের স্কুলে। ২০১৮ সালে আমাদের স্কুলের বেশকিছু শিক্ষার্থী কোডিং শিখতে আগ্রহী হয়। তাদের কিছুদিন কোডিং শেখাই আমি। তবে সে বছর আমার পিইসি পরীক্ষা থাকায় কিছুদিনের জন্য বাদ দিতে হয়।
২০২০ সালে করোনাভাইরাসের কারণে যখন সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলো, তখন আমি ইউটিউবের মাধ্যমে শিশুদের কোডিং শেখাব বলে ঠিক করলাম। কিছুদিন যাবৎ আমি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দী তিনটি ভাষায় প্রোগ্রামিং টিউটোরিয়াল আপলোড করছি। এ কাজটি করে আমি আনন্দ পাই। আমি মনে করি কোডিং নির্ভরই হবে আগামীর বিশ্ব।