প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঘোষিত ছুটি আরো বাড়তে পারে। এই ছুটি আগামী মে মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। আগের সরকারি ঘোষণা মতে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই সাধারণ ছুটি রয়েছে।
এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় যেন কোনো ক্ষতি না হয় তার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য টেলিভিশনে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে সরকার। গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিক স্তরের পাঠদান চলছে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে। আর ৭ এপ্রিল, মঙ্গলবার দুপুর ২টায় শুরু হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি শ্রেণির ২০ মিনিট করে পৃথকভাবে পাঠদান করা হবে। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদেরও অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো শিক্ষক চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কানেকটিভি ‘বিডিরেন’ ব্যবহার করে লেকচার দিতে পারছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার হচ্ছে মহামারী মোকাবেলা। আমাদের অনেক ছাত্রছাত্রী দেশ-জাতির সেবায় নিয়োজিত। তাই এ মুহূর্তে লেখাপড়ার চেয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা জরুরি। এই দুর্যোগ শেষ হলে আমরা লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার করণীয় নির্ধারণ করবো।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি তিন দফা বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি আর কতদিন স্থায়ী থাকবে, তা কেউ বলতে পারছেন না। তবে ভাইরাসটির সামাজিক-বিস্তৃতির বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই ছুটি বাড়তে পারে বলেই অনেকের ধারণা।
শিক্ষ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একবারে ঈদের পর খোলার ঘোষণা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। কারণ ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু হয়ে যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। বর্তমান শিক্ষাপঞ্জি হিসাবে, ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলো ১৪ এপ্রিলের পর রোজার ছুটির আগ পর্যন্ত মাত্র ৬ দিন ক্লাস করার সুযোগ আছে।