9:41 PM, 12 March, 2025

প্রতিবন্ধী আনিছ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে চাকরি চান

dfd
কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গুরুদয়াল সরকারি কলেজে মাস্টার্স পড়ুয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী আনিছ অন্যের উপর নির্ভর নয় বরং শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়ে জয় করতে চায় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা।

দুপায়ে হেঁটে চলার ক্ষমতা না থাকার শর্তেও গরীব অসহায় বাবা মা ও বন্ধুদের সহায়তায় হুইলচেয়ারে চড়ে শিক্ষা জীবন শুরু করে বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে লতিফপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। ২০১১ সালে লতিফপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪.৪৪ পেয়ে এসএসসি তে উত্তীর্ণ হয়। এরপর ২০১৩ সালে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ৩.৯০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় এইচএসসিতে। ২০১৭ সাল একই কলেজ থেকে দর্শন বিভাগে ৩.১৯ পেয়ে অনার্সে উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে শারীরিক প্রতিবন্ধী আনিছ গুরুদয়াল সরকারি কলেজে দর্শন বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ১নং রশিদাবাদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শ্রীমন্ত পুর এলাকার ঝালমুড়ি বিক্রেতা মোঃ সিদ্দিক হোসেনের ছেলে আনিছুর রহমান আনিছ।তার বাবা ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালায়।গরীব অসহায় বাবা মায়ের এক ছেলে এক মেয়ে দুজনেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। আনিছের ছোট বোন শারীরিক প্রতিবন্ধী আমেনা বেগম কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
প্রতিবন্ধী দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রেতা বাবা সিদ্দিক হোসেন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সারা দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে সামান্য আয়ে চলে তাদের সংসার। অনেক সময় না খেয়েও থাকতে হয়। এমতাবস্থায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা বাবার সংসারে বোঝা হয়ে পড়েছে শিক্ষিত প্রতিবন্ধী আনিছ ও তার বোন। প্রতিবন্ধী আনিছ মাস্টার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় অনেক চেষ্টা করেও একটা সরকারি চাকরি পাচ্ছে না।

প্রতিবন্ধী আনিছ জানান, ঝালমুড়ি বিক্রেতা বাবার সংসারে আমি এবং আমার ছোট বোন শিক্ষিত হয়েও বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি। আমি কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজে দর্শন বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।এমন অবস্থায় অনেক চেষ্টা করেও একটা চাকরির সুযোগ পাচ্ছিনা। আমার পরিবার কে বাঁচাতে একটা চাকরি আমার খুবই প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ইদানিং লক্ষ্য করছি গরীব অসহায় মানুষের পাশে সাহায্যের দূত হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং আমাকে অন্তত প্রতিবন্ধী কোটায় হলেও একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশেরবার্তার মাধ্যমে গত ২৫ মার্চ ২০২০ ইং তারিখে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যার এখন পর্যন্ত কোন সারা পাওয়া যায়নি। তবে করোনাকালীন সময়ে কিশোরগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক কিছুটা খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সহযোগীতা করেছেন। কিন্তু এমন সহযোগীতা আর কতদিন? পরিবারটির জন্য দরকার একটি স্থায়ী চাকুরী। আর এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরী।

রশিদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিস মিয়া জানান,আনিছ শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে।যা একটি বিরল দৃষ্টান্ত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী আনিছের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে আমি আমার ইউনিয়ন বাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞ থাকবো।

এছাড়াও এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে মাস্টার্স পড়ুয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী আনিছের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ জানান।

এছাড়াও প্রতিবন্ধী আনিসের পাশে থাকার অনুরোধ করেছেন স্থানীয় গণমান্য ব্যাক্তিবর্গরা।