5:41 PM, 29 March, 2024

গাইবান্ধা ডাকঘরে এখন আর ব্যক্তিগত চিঠি আসে না

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:
‘‘চিঠি কেন আসে না আসেনারে চিঠি, বন্ধুর লেখা চিঠি কেন আসেনা’’। একটি সময় যখন ডাকঘরই ছিল সবধরণের খবরা খবর নির্ভর ব্যক্তিগত চিঠি আদান প্রদানের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ডিজিটাল এই সময়ে মোবাইল, ফেসবুক ও ইন্টারনেটে যুগে ডাকঘরের মাধ্যমে ব্যক্তিগত চিঠি আদান প্রদান এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আশংকাজনক যে তথ্যটি জানা যায়, তাতে গাইবান্ধার প্রধান ডাকঘরে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ সংক্রান্ত ব্যক্তিগত চিঠি ইদানিং খুব বেশী আসছে। এরমধ্যে মেয়েদের তরফ থেকেই বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়া যাচ্ছে বেশী। কিন্তু তাই বলে ডাকঘরে চিঠি আসার পরিমাণ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়নি। বিভিন্ন এলাকা এবং দেশ-বিদেশ থেকে এখনও চিঠি আসে। তবে অপেক্ষাকৃত অনেকটাই কম। আগে চিঠি পোস্ট করার জন্য জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাল রংয়ের ডাকবাক্স থাকলেও এখন সেগুলো আর নেই। শুধুমাত্র গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘরের সামনে রাস্তার ধারে এখনও স্মৃতিকে ধারণ করে রেখেছে লাল রংয়ের একটি ডাকবাক্স। রাস্তায় যাতায়াতকারি মানুষ মাঝে মধ্যে এতে চিঠি ফেললেও সেগুলো কোন ব্যক্তিগত চিঠি নয়। অধিকাংশই কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ অথবা সরকারি কোন অফিস আদালত এবং ব্যাংকের চিঠি বা আবেদন-নিবেদন।

গাইবান্ধা শহর এলাকার বিট পিয়ন মশিউর রহমান মন্ডল জানান, তার বিটে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি চিঠি আসে বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের নোটিশ। অন্য তিনজন বিট পিয়ন একধরণের কথা জানালেন। সবচেয়ে আশংকাজনক যে তথ্যটি তিনি উলে­খ করেন প্রাপ্ত বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশগুলোর মধ্যে মেয়েদের পক্ষ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশের সংখ্যাই অপেক্ষাকৃত বেশী।

গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘরে চিঠি বাছাই ও বিলি বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন এলাকার বিট পিয়ন এবং ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ডাকঘরে আসা চিঠিপত্রের ধরণ সম্পর্কে নানা তথ্য জানা যায়।
এব্যাপারে গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘরের সহকারি পরিদর্শক মো. মোসলেম উদ্দিনের সাথে কথা বলে সাংবাদিকগণ জানতে পায় যে, জেলার এই প্রধান ডাকঘরের আওতায় বিভিন্ন এলাকা থেকে চিঠি আসা এবং বিভিন্ন এলাকায় প্রেরণ করা চিঠির সংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও এখনও প্রতিদিন যথেষ্ট চিঠি আসে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী চিঠি থাকে সরকারি অফিস আদালত, ব্যাংক এবং বিভিন্ন অফিস আদালতের ব্যক্তিগত পর্যায়ের অভিযোগের চিঠি। তিনি বলেন, সাধারণত ব্যক্তিগত চিঠি এখন আর আসে না। কেননা মোবাইলে যোগাযোগ, চিঠির চাইতে অনেক দ্রæত করা যায়। তবে ইদানিং ব্যক্তিগত যেসমস্ত চিঠি বেশী আসছে সেগুলো হলো বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকনামার আইনা অনুযায়ি প্রদত্ত নোটিশের চিঠি। প্রতিদিন গড়ে এই ডাকঘরে ২০ থেকে ২৫টি এধরণের বিবাহ বিচ্ছেদের চিঠি পাওয়ায় বলে তিনি উলে­খ করেন। তার ধারণা অনুযায়ি জেলার অন্যান্য উপজেলা ডাকঘর ও সাব ডাকঘর মিলে এ ধরণের বিবাহ বিচ্ছেদের চিঠির পরিমাণ ৩০ থেকে ৩৫টি বলে তিনি উল্লেখ করেন।