1:40 PM, 13 November, 2025

১০ জেলায় বন্যা, বাড়তে পারে প্লাবন এলাকা

flood_4

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ দেশের ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। মূলত চলমান ভারিমাত্রায় বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে এ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শুক্রবার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘দুই কোটি ৯৩ লাখ টাকা, সাড়ে ১৭ হাজার টন চাল এবং ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এসব জেলায় দু’এক দিনের মধ্যে ৫০০ তাবু পৌঁছে যাবে এবং মেডিকেল টিমও তৈরি করা হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় বন্যা মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

তিনি আরো বলেন, ‘লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার এবং নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থির অবনতি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন ভারি বর্ষণ হতে পারে, এজন্য বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যমুনা নদীতে পানি বাড়বে এবং বিহারে গঙ্গার পানি বাড়ায় পদ্মার অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যেই দেশের ৬২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে, তারমধ্যে ২৬টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলোতে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ৫৫১টি সেন্টারকে ঝুঁকিমুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। জামালপুরে ভাঙনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে এবং লালমনিহাটে তিস্তা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এগুলো মোকাবেলায় কাজ শুরু হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে সব ধরনের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সাথে সিভিল সার্জনদের নেতৃত্বে টিম গঠন করা হয়েছে যাতে পানিবাহিত রোগ বিস্তার রোধ করা যায়। খাদ্যগুদামে কর্মরতদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’

কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মেডিকেল টিম গঠন করেছে এবং প্রচুর পরিমাণে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্রস্তুত রেখেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলেও এ সময় জানান প্রতিমন্ত্রী

বন্যা নিয়ে ত্রাণ সচিব শাহ কামাল বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় দুই হাজার প্যাকেট করে মোট ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে। একটি প্যাকেটে চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট, তেল, আটা, মসুরের ডাল, শিশু খাবারসহ একটি পরিবারের সাত দিনের খাবার রয়েছে।’

সচিব আরো বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৯৩ লাখ নগদ টাকা এবং দুই দফায় সাড়ে ১৭ হাজার টন চাল বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে। কোনো জেলা প্রশাসক চাহিদা পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে চাল দেয়া হবে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।