প্রিয় হৈম,
ফাগুনের আগুন ঝরা দিনের শেষে চৈত্রের দাবদাহ শুরু হয়েছে। সূর্য যেমন আগ্রাসী হয়ে চৈত্রে পুরো পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে, তেমনি আমারও আগ্রাসী হতে ভীষণ ইচ্ছে জাগে! ইচ্ছে করে বাউণ্ডুলে হয়ে যাই। তোমাকো ভালোবেসে সব ছুড়ে ফেলে নির্লজ্জের তোমার সাথেই মিশে রই। গ্রাস করে নেই তোমাকে। তোমার অস্তুিত্ব যে এই আমাতে বিশালাকায়।
আমার বারান্দা, উপন্যাসের প্রতিটা পৃষ্ঠা, কবিতার ছন্দে, নীল রঙের কলমটায়, আমার আদৌ ঘুম, আদৌ জাগরণে, অর্ধমৃতের ঘরে সবটা জুড়েই প্রখরভাবেই তোমার অনিবার্য অস্তিত্ব বিদ্যমান। তোমাকে সরানোর মত এতো বড় দুঃসাহস আমার আদৌ হয়নি।
আমাকে কী ভিখারি, কাঙালী ভাবো তুমি হৈম? এমন স্বভাবের কী কখনো ছিলাম আমি? তুমিই তো বলতে কী এক বেরসিক, প্রাণহীন পুরুষ তুমি! শরতে, বসন্তে বৃক্ষরাজির রঙিন ফুল, কোকিলের মিষ্টি গানেও কী তোমার মনে রস আসে না! আবার তুমি তোমার সৌন্দর্যের যে অভিধান বর্ণনা করলে আমার চর্ম চোখ ও মনের আয়নায় সেকি ভুলেই বসেছ! আমি যে তোমার সেই সুন্দর আবিষ্কারের নেশায় দুচোখ এক করতেই ভুলে গেলাম।
চিঠি যখন পড়বে ভাববে আমি আবোল তাবোল বকছি! জানি না এই স্বভাবটা তোমার এখনো আছে কিনা! কেমন আছো? যাচ্ছে কেমন দিন? এখনো কী রাতের দুঃস্বপ্ন দেখলে ফোনে আমার সাথে সারারাত কথা বলে কাটাতে ইচ্ছে করে?
তোমার অন্তরাত্মা কী এখনো তার স্বচ্ছ আয়নায় দূর থেকে দেখতে পায় যে ঘোর আন্ধার রাত আমার টেবিল লাইটটা তখনো জ্বলছে! লিখছি আমি আনন্দ-বেদনার অশ্রুতে ভেজা নীল কাব্য।
আমি তো বাউণ্ডুলে আজ! তবুও আমার জীবনের ছত্রে ছত্রে তোমার বসবাস।তোমাকে ভুলে যাওয়ার কোনো যন্ত্র আজও আবিষ্কৃত হয়নি।
সমুদ্র থেকে চেয়ে নিয়েছি কিছু মেঘের বীজ, লাগিয়েছি দুচোখের গহীন কোণে। মাঝে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। আবারও নতুন করে গজায়। আজকাল এভাবেই দিন যাচ্ছে তোমাকেহীন এই বাউণ্ডুলের।
বসন্তের রঙে রঙিন হোক তোমার পাপড়ির মত জীবন। ভালো থেকো হৈম। ভালো থেকো।
ইতি
তোমার মেঘ
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম