কবি সাজ্জাদুল বারী’র কবিতা “চিঠি”

চিঠি
— সাজ্জাদুল বারী
গত সপ্তাহে বইয়ের পুরনো আলমারি পরিষ্কার করছি
হঠাৎ শরৎ বাবুর চরিত্রহীন বইটি নজরে এল—
হাতে নিয়ে ধুলো মুছতেই আচমকা পড়ে গেল মেঝেতে
ভেতর থেকে বেরিয়ে এল একগাদা ভাজ করা কাগজ।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাগজগুলো তুলে নিলাম হাতে ।
একটি কাগজের ভাঁজ খুলতেই অনিচ্ছা সব উড়ে গেল
ইচ্ছারা জেঁকে বসলো তাদের পুরনো আধিপত্ত নিয়ে।
দেখি সিভিল সার্ভিসের প্রবেশ পত্র,তামাটে রঙ ধরেছে,
অন্য আর একটি খুলে দেখি দশ টাকার তিনটি নোট
আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে, যদি আরও কিছু মেলে তকদিরে।
পরেরটা খুলতেই শরীর- মন শিউরে উঠে হাসি পেল
এক্সারসাইজ খাতার দু’পৃষ্ঠায় লেখা একটি চিঠি—
ডরোথীর জন্মদিনের নিমন্ত্রণ জানাতে আমাকে লেখা।
অনেক দিন পরে প্রথম দিনের সেই আগ্রহ নিয়ে আজ
আবারও পড়লাম তোমার লেখা নিমন্ত্রণ পত্রটি।
পত্রটির বয়স আজ আটাশ, আর তোমার ছেচল্লিশ।
অষ্টাদশী সেই তুমি ছেচল্লিশে নিশ্চয় অনেক বদলেছো
কিন্তু;তোমার চিঠিটা একটুও বদলায়নি,ঠিক আগের•••
অষ্টাদশী উর্বরা হাতে ছন্দ মিলে লেখা “ড” অক্ষরটি
অপাঙক্তেয় হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে আছে তৃতীয় চরণে
দেখে মনে হবে যেন গয়ার অন্তঃসলিলা বহমান ফল্গু।
আজও ঠিক তোমার মত করেই সেই ঢঙে কথা বলছে।
আমি যেন স্পষ্টই শুনতে পাচ্ছি পত্র লেখার সময়
তোমার কাঁচের রেশমী চুড়ির একটানা টুং টাং শব্দ।
সেই পত্রের সাথে যে ফুলটি দিয়েছিলে, তাও পেয়েছি;
ওকে আর গোলাপ বলে চেনা যায় না,কাজল হয়েছে।
সৌন্দর্য সুবাস সব হারিয়ে ও এখন নিঃস্ব, জঞ্জাল।
দিন গুণে অপেক্ষা করছে ডাস্টবিনে যাওয়ার জন্য।
চিঠি পড়ছি আর পৌঢ় থেকে জোয়ান হচ্ছি ক্রমে ক্রমে
বয়স কমছে,কমছে কমতে কমতে আঠারোই এসে স্হির
অবাক হচ্ছি কাগজের কয়েকটি লাইনের শক্তি দেখে।
এক নিমেষেই আমাকে দুমরে মুচড়ে পাপড় বানিয়ে দিল
এক হাতে চরিত্রহীন অন্য হাতে তুমি, মানে তোমার পত্র
আমার দু’হাতই এখন ভীষণ ব্যস্ত, — শরৎ আর তুমি
দুজনে মিলে টেনে হেঁচরে আঠারোতে নিয়ে এলে মোরে।
এযেন এ যুগের টাইম মেশিন,সময়ের বিপরীতে চলছে।
মেশিন চলছে আর ফিরে পাচ্ছি একটি করে অতীত।
হ্যাঁ শোনো,তোমার দেয়া দিদির ছবিটি মানিব্যাগে নেই
রাগান্বিত হয়ে ফেলে দিয়েছি বৈশাখের নিভৃত বিকেলে।
কারণ ঐ ছবির কোনো উপকারেই আসতে পারনি বলে
আর যে রঙিন জামাটার তুমি একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলে
সেও অনেকদিন আগে যৌবন হারিয়ে ভিখারী হয়েছে।
এখন পথে ঘাটে কোথায় কি অবস্হায় আছে জানিনা।
তোমার মেরুন রঙের পার্কার কলমটি ট্রেনে হারিয়েছি,
কি করবো, সেদিন এত বেশি ভিড় ছিল যে, —
ঠেলাঠেলি করে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পকেট থেকে উধাও।
তোমার পত্রের শেষান্তে পুনশ্চঃ দিয়ে লিখেছো;
নিমাই ভট্টাচার্যের “মেমসাহেবের”পরিণতি কী হয়েছিলো?
জ্ঞান স্বল্পতার কারণে সেদিন বলতে পারিনি সে কথা,
শোনো, তোমাতে আর মেমসাহেবে ঐ এক জায়গায় মিল।
বাচ্চু আর আমার মাঝে যোজন যোজন ফারাক।

I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.
Can you be more specific about the content of your article? After reading it, I still have some doubts. Hope you can help me.