হয়তো জাগবো আমিও – একে আজাদ

হয়তো জাগবো আমিও
– একে আজাদ
দু’পাশে ধুলোর আস্তরণ পড়া ;
মাঝখানে পুরনো কাথার তেল চিটচিটে বিছানায় শুয়ে দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছি সভ্যতার এক একটি ক্ষণ।
মনে হয় আমি এই পৃথিবীর দুরারোগ্য আক্রান্ত অচল পুরুষ।
ভাবছি আমাকে নক্ষত্র ভালোবাসেনা,
আমার অবলোকনে খসে পড়ে পৃথিবীর পরে।
সূর্য ঢেকে যায় নিকষকালো মেঘের আড়ালে
চন্দ্রালোকিত রাতও অমাবস্যার অন্ধকারে পতিত হয়।
আমাকে ভালোবাসেনা কেউ।
শিশু পার্কের দোলনায় দোল খাওয়া দেখতে গিয়েছিলাম বহুদিন পর বিকেলটায়,
আকস্মাৎ শিশুটি আমার অবলোকনে মুখ বন্ধ করে সেকি কান্না জুড়ে দিল!
রমনা পার্কের গোলাপ গাছটায় যেই ছুঁয়েছি, খসে পড়ল অমনি গোলাপটা!
আসলে আমাকে কেউই চায় না।
রেণু সেদিন আমার সামনে আসতে দ্বিধা করছিল।
বললাম,” লজ্জা পাচ্ছো আমায়?”
ভারী গলায় উত্তরে জানান দিলো,
“তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে না আর।
চলে যেতে পারো না এই শহর-গ্রাম-ভুবন ছেড়ে?”
আমাকে রেণুও তাচ্ছিল্য করে চলে গেলো।
অথচ আমার ঘামের গুমোট গন্ধকেও সে আপাদমস্তক পৌরুষের গন্ধ বলেছিল।
আজ এই পথের শেষে, অচিন সীমান্তে এসে
নিজের উপর ভীষণ ভালোবাসা জন্মে গিয়েছে।
ঘৃণা করুক কুমেরু-সুমেরু, করুক ঘৃণা সকল রেখা।
আমি এখনো জেগে! ফুরোয়নি আমার দিন! আমার সক্ষমতা, আমিও জাগবো কোনোদিন কুয়াশা ভেদ করে।
