আতিক আনন্দ কর এর কবিতা “ভালোবাসলে ঘৃণা করা যায় না”

ভালোবাসলে ঘৃণা করা যায় না
তোমাকে ভালোবাসতে গিয়ে জেনেছি,
সাতাশ বছরের জীবনে কোন রমণীকে
আমি ভালোবাসতে পারি কবিতারও অধিক।
ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হওয়ার পর ব্যাঙ যেমন ছটফট করে
ঠিক তেমনি বুকের বা-পাশে বয়ে যায় মৃত্যুর হুইসেল!
ভালোবাসলে প্রেমিক-প্রেমিকা নয় বন্ধু হয়ে উঠতে হয়!
যার বুক ছুলে মাংস নয়, উঠে আসে বসন্তের কবিতা।
কাজলহীন চোখের ভেতর সমুদ্রের বাস,
অন্তরে এক বিস্তীর্ণ জনপদ।
যেখানে কোন ধর্ম নেই,
কোন ইশ্বর নেই,
ভগবান নেই,
কিতাব নেই,
উপাসনালয় নেই।
শুধু ঘুমন্ত ঠোঁট কম্পমান,
যে বলতে চায় আমাকে আলিঙ্গন করো,মুক্ত করো।
চিবুক পৃথিবী পবিত্র তীর্থ স্থান,
যেখানে চুমু দিলে মুছে যায় সকল পাপ,
হয়ে উঠি এক সিদ্ধ পুরুষ।
বহুগামিতা ভুলে যে ইমান আনে এক রমণীর প্রতি!
ভালোবাসতে গিয়ে জেনেছি,
আসলে ভালোবাসা বলতে কিছু নেই,
শুধু সময় ক্ষেপন, আবেগের জলকেলি।
স্মৃতিতে প্রাক্তন ঘুড়ি উড়ায়,
স্মৃতিতে প্রাক্তন দোল খায়,
দরজা বন্ধ খুলে দাও,
জানালা বন্ধ খুলে দাও,
মৃত্যুর মিছিলে উঠে নাম।
কণ্ঠ রুদ্ধ,
কলম ভাঙা,
ফ্যানে ঝুলে পড়ে কবিতার খাতা!
ভালোবাসার আদিতে বরাবরি মায়া অন্তে বিষাদ।
ভালোবাসলে ঘৃণা করা যায় না,
শুধু এক স্বচ্ছ কাঁচের প্রাচীর উঠে যায় দুটি লাশের বুকে।
সাতাশ বছরে কাউকে কবিতারও অধিক;
আমি ভালোবাসতে গিয়ে জেনেছি,
ভালোবাসাটা একটা আয়না,
এপাশে তাকালে অরুন্ধতী, ওপাশটা দেখা যায় না!
