হয়তো সবাই পায় কখনও না কখনও। কিন্তু সবার ভাগ্যেই কি জুটে একজন জীবনসঙ্গী যে কিনা তার অর্ধ জীবনের আধাকে পূর্ণতা দিতে পারে? হতে পারে তার অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ যাকে চাইলেও কেউ করতে পারে না আলাদা হৃদয় থেকে বা জীবন থেকে?
আজও হয়তো কত পুরুষ খুঁজে ফিরে এমন একজন জীবনসঙ্গী যাকে কিনা তার নিজের জীবনসঙ্গীর মাঝে কখনও খুঁজেই পায় নি। হয়তো পেয়েছে অন্য কারো বউয়ের মাঝে, অন্য কারো প্রেমিকার মাঝে বা অন্য কারো নারীর মাঝে। সারাজীবন হয়তো এই আফসোসেই কেটে যায় তার, জীবনসঙ্গীটি তার স্বপ্নের মত হল না, তার মনের মত হল না।
আজও হয়তো কোটি কোটি নারী বিবাহিত বড্ড একা। জীবনসঙ্গীর মাঝে একজন শয্যা প্রেমিক তো সে খুঁজে পায়, কিন্তু যে বন্ধুটি তার জীবনের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল, সেটাই কখনও ভাগ্যে জুটে না। বহু কষ্ট, কান্না, আর্তনাদ মন চাইলেও পারে না জীবনসঙ্গী নামক একজন সঙ্গীর সাথে শেয়ার করতে। কেননা সেই সঙ্গীটির কাছে তারা কান্না বা তার কষ্ট বা তার চোখের পানি নিতান্তই ন্যাকামি বা বিরক্তির হয়ে থাকে।
কত শত খুশি হয়তো সে চায় তার জীবনসঙ্গীর সাথে লুটিয়ে শেয়ার করতে। কিন্তু সামান্য সময় কই থাকে তার? সে হয়তো মনে মনে সামান্য একটু সম্মান আশা করে জীবনসঙ্গীর কাছে। কিন্তু সে হয়তো সর্বদা একজন গৃহকর্মী ও শয্যাসঙ্গী পর্যন্তই মূল্য পায়। সম্মানের যোগ্যতাই যেন তার নাই।
কত হৃদয়ের শুন্যতা আজ সংসার বা সন্তান বা স্বার্থের মাঝেই হারিয়ে যাচ্ছে। কেউ টের পায় না। হৃদয়ের সেই জীবনসঙ্গীর শুন্যতা বা আকুতি যেন এক সময় হৃদয়ের কোন এক কোণে কবর হয়ে যায়। থাকে শুধু এক ঝাক দায়িত্ব। কখনও স্ত্রী হিসেবে, কখনও বউ হিসেবে, কখনও মা হিসেবে, কখনও সন্তান হিসেবে, কখনও বোন হিসেবে তো কখনও কত কত সম্পর্কের ক্ষেত্রেই।
কিন্তু আসলেই কি সবার ভাগ্যে জীবনসঙ্গী জুটে?
অন্য কারো ভাগ্যে জীবনসঙ্গী জুটেছে কি না জানি না। তবে আমার ভাগ্যে আমি কোন সঙ্গীর সাথে থাকার অভ্যাসটাই গড়ে তোলার সুযোগ পাই নি। জীবনসঙ্গী বহু দূরের কথা। তবে হ্যাঁ, কারো শয্যাসঙ্গী বা গৃহকর্মী বা কেয়ার টেকার বা টাকার মেশিন বা সন্তান জন্মের মেশিন বা শুধুই একটা মাংসপিণ্ড অবশ্যই হতে পেরেছি।
তবে এখন আর আমার জীবনসঙ্গী চাই না। কারন যেগুলো হয়ে দেখার ছিল একটা মেয়ে হিসেবে সব ই হয়ে দেখেছি। এবার একটু মানুষ হতে চাই, মাংসপিণ্ড নয়। এবার একজন মা হতে চাই, যে মায়ের সন্তানকে আমি শিক্ষা দিতে চাই মানুষ হবার, না মাংসপিণ্ড হবার বা না কাউকে মাংসপিণ্ড ভাবার। যে যন্ত্রণায় আমি একবার গিয়েছি, আমি চাই না আমার সন্তানের ভাগ্যেও সেই যন্ত্রণা জুটুক বা সেও কাউকে এমন যন্ত্রণাই প্রদান করুক।
লেখকঃ মারুনা রাহী রিমি
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম