বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী হত্যা মামলা বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এ তথ্য জানান আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার নথি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বিচারক এ আদেশ দিয়েছেন। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য মামলাটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের কাছে পাঠানো হবে। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হবে।
২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। এরপর চলতি বছরের ৫ তারিখে তাদের গ্রেপ্তারে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আদেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
চার্জশিটে ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ৬ জনের জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চার্জশিটে ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা আদালতে দাখিল করা হয়েছে দেওয়া হয়েছে।
এজাহারনামীয় আসামিরা হলো−মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এএসএম নাজমুস সাদাত।
এজাহারবহির্ভূতে আসামিরা হলো−ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও রাফি। এর মধ্যে ১৬ জনের নাম হত্যা মামলার এজাহারে উল্লেখ ছিল। বাকিদের নাম তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে গত বছরের ৫ অক্টোবর শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশকে খবর দেয় মারধরের সঙ্গে জড়িতরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলিট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতোমধ্যে পুলিশ ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ৬ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম