11:28 AM, 13 November, 2025

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ওয়েবসাইটে তথ্য বিভ্রাট

11-24
 রুবেল আহমদ,গোলাপগঞ্জ (সিলেট)ঃ
মো. ফারুক আজম চৌধুরী গোলাপগঞ্জ উপজেলার সাবেক পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা। তিনি গত বছরের ১১ মে মৃত্যুবরণ করেন। ইতিমধ্যে পেরিয়ে গেছে ১৫ মাস। অথচ মৃত্যুর ১বছর পরও স্বপদে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি! এ সময়ের মধ্যে গোলাপগঞ্জে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে ৩জন কর্মকর্তা রদবদল হলেও উপজেলা তথ্য বাতায়নে দেখাচ্ছে ফারুক আজম চৌধুরীর নাম।

অথচ বর্তমানে গোলাপগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন রবিন্দ্র কুমার তালুকদার। সম্প্রতি গোলাপগঞ্জ উপজেলার ওয়েবসাইট (http://www.golapganj.sylhet.gov.bd) ভিজিট করে দেখা যায় শুধু পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা নয়, গোলাপগঞ্জ মডেল থানা, জনগুরুত্বপূর্ণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়, উপজেলা মৎস্য অফিসসহ বেশ কয়েকটি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম নিয়ে রয়েছে ওয়েবসাইটে তথ্য বিভ্রাট।

পূর্ববর্তী কিংবা তারও পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নাম্বার রয়েছে সেখানে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান’র নাম পরিচয় থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদের কলামে কোন তথ্য নেই। জনগনের দোরগড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশের সকল জেলা-উপজেলাকে অনলাইনের আওতায় এনেছেন।

কিন্তু গোলাপগঞ্জে এখনও ডিজিটালের ছোঁয়া লাগেনি। নামে মাত্র উপজেলার ওয়েবসাইট রয়েছে, কার্যক্রমে দেখা
দিয়েছে স্থবিরতা। ওয়েবসাইট থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে কল দিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনেক ভিজিটর।ওয়েব’র আপডেট না থাকায় এমন বিড়ম্বনায় পড়ছেন বলে জানান ভিজিটররা। সংশ্লিষ্টদের এমন উদাসীনতায় ওয়েসাইটের তথ্য বিভ্রাটে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী। উপজেলা প্রশাসনের খামখেয়ালিতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত আপডেট করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। তথ্য বাতায়নে উপজেলা প্রশাসনের এমন গাফলতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন মানুষ।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বর্তমানে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে মিজানুর রহমান দায়িত্বে থাকলেও বদলি হয়ে যাওয়া কর্মকর্তা পূর্ববর্তী ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলীকে স্বপদে বহাল দেখানো হয়েছে ওয়েবসাইটে।

উপজেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার হিসেবে ফনীন্দ্র চন্দ্র সরকার’র নাম ও মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়। মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, চলতি বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে বদলী হয়ে তিনি টাঙ্গাইলে কর্মরত আছেন। গোলাপগঞ্জে বর্তমানে এ পদে কর্মরত আছেন আহম্মেদ কবির খাঁন। এছাড়াও তথ্য বাতায়নে দেখা যায় জনগুরুত্বপূর্ণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে ডা. রেহান উদ্দিনের নাম, মোবাইল ও ছবি। অথচ ৩বছর আগেই গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী হয়েছেন তিনি। মুঠোফোনে আলাপ হলে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন ডা.তউহিদ আহমদ।

এদিকে গত বছরের এপ্রিলে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান অবসরে যান। তবে ওয়েবসাইটে হাবিবুর রহমানের কর্মরত আছেন বলে তথ্য রয়েছে। অথচ বর্তমানে এ পদে কর্মরত আছেন মাহমুদুল হাসান। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে হাবিবুর রহমান থাকলেও ওয়েবসাইটে আলতাফুল হক ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাইদুর রহমানের পরিবর্তে রয়েছে এমদাদুল হক’র নাম। এছাড়াও সমাজসেবা অফিসার ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার কলামে কোন তথ্যই পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান বলেন, আমার অফিসের তথ্য গত সপ্তাহে আপটেড করেছি। আমার অফিস ছাড়া বাকী অফিসের তথ্য স্ব স্ব কর্মকর্তার আপডেট করার কথা। তবুও বিষয়টি আমি দেখছি।