পলাশবাড়ী নলেয়া নদীতে অপরিকল্পিত উন্নয়ন

আশরাফুল ইসলাম
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
সরকারের উন্নয়নে সুফলের চেয়ে কুফল ভোগে বেশী কাদের কারণে তাহলো মাঠ পর্যায়ে অজ্ঞ কর্মকর্তাদের কারণে যে মাপে ব্রিজ হবে সেখানে তো আগে সংযোগ সড়কটিও করতে হবে। সড়ক বিহীন ব্রিজ কিভাবে হয়। অর্থের ব্যয় সঠিক স্থানে না করে বেশী অপচয় আর আয় করতেই একশ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তার কারণে পলাশবাড়ীতে নলেয়া নদীতে অপরিকল্পিত উন্নয়ন সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা অলসভাবে ফেলে রাখার প্রমাণ এই গাইবান্ধাতেই মিলে। রাস্তা ১ ফুট ব্রিজ হলো ১৪ ফুট তাহলে মানুষ কি যানবাহন নিয়ে ঝাপ দিয়ে উঠবে। ব্রিজ ১৪ ফুট করার আগে সংযোগ সড়কটিও বাধ্যতা মুলক ভাবে ১৪ ফিট করতে হবে চলাচলের উপযোগী থাকতে হবে দুই পাশে অন্তত ১ কিলো সড়ক। এরপরই কেবল একটি ব্রিজ পুনাঙ্গতা পায়। আপনারা সরকারি কর্মকর্তাগণ কেন এসব দায়সারা কাজ করছেন। এটা কি সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে না। এই ব্রিজটি অলস ভাবে না রেখে গোটা উপজেলার একটি একটি করে এলাকা বরাদ্দের বিশেষ ভাগ অংশ ব্যবহারে দুর্যোগের দূর্ভোগ কমাতে।
জেলার পলাশবাড়ীতে প্রায় ৫৪ লাখ ৪ হাজর ছয়শত পঞ্চাষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত স্বপ্নের সেতু। কিন্তু সংযোগ সড়ক অভাবে সেতুটি কোন কাজেই আসেনি গত বছর গুলোতে । সেতুটি নির্মানের ৩ বছর গত হলেও ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্কুল-কলেজগামী অসংখ্য শিক্ষার্থীসহ এলাকার সর্বস্তরের বৃহৎ জনগোষ্ঠী। উপজেলার মহদীপুর ইউপি’র ছোট ভগবানপুর প্রধানপাড়া ও বেতকাপা ইউপি’র পূর্ব নয়ানপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় সীমান্তবর্তী নলেয়া খাল। এ খালের ওপর ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে গত ৩ বছর আগে বিগত ২০১৭-২০১৮ খ্রি. অর্থ বছরে প্রায় ৫৪ লাখ ৪ হাজর ৬ শত পঞ্চাশ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফিট সেতু নির্মান করা হয়।
সেতুটির কংক্রিটে আঁটানো ফলকে বেতকাপা ইউপির পূর্ব নয়ানপুর দক্ষিণপাড়া হতে মহদীপুর ইউপির ফুঁটানির বাজার সড়কের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সেতুটি ব্যবহারের নিমিত্তে সেতু পর্যন্ত আজও নির্মিত হয়নি যাতায়াতের জন্য কোন সংযোগ সড়ক।
সেতু ব্যবহার থেকে বঞ্চিত বেতকাপা ইউপি’র পূর্ব নয়ানপুর ও পবনাপুর ইউপি’র গোপিনাথপুর গ্রামের ভুক্তভোগী মানুষজন তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় রবি শস্য ছাড়াও বিভিন্ন কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়সহ নানা প্রয়োজনে সেতু ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। তারা নলেয়া খালের ওপর দিয়ে ফুটানির বাজার-ঢোলভাঙ্গা বাজার, কিংবা আমলাগাছীহাট হয়ে অন্যান্য হাট-বাজারসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করছেন।
এছাড়া উল্লেখিত ওই দুই গ্রামের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও নিত্য-নৈমত্তিক বিপরীত রাস্তা ব্যবহার করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছে। তারা নলেয়া খাল পার হয়ে ছোট ভগবানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমলাগাছী ডি.ইউ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, আমলাগাছী বিএম উচ্চ বিদ্যালয়, ঢোলভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ও ঢোলভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সমূহের যাতায়াত করছেন।
স্থানীয় অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গামী শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীরাও নির্মিত সেতু ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। সেতু ব্যতিত ওই নলেয়া খাল পারাপারের মধ্যদিয়েই শিক্ষার্থীসহ ভুক্তভোগীদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে।কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য নির্মিত সেতুর সংযোগ থেকে মুল সড়ক সংযোগের দূরত্ব মাত্র ৩শ’ মিটার। মাত্র দূরত্বটুকু মাটি ভরাটের মাধ্যমে সেতুটির সাথে সংযোগ রাস্তা না করায় জনদুর্ভোগ কোনক্রমেই যেন পিছু ছাড়ছে না ওই দুই গ্রামের সর্বস্তরের মানুষের।বর্ষা মৌসুমে ভুক্তভোগীদের দূর্ভোগ আরো চরমে উঠে। নানমুখি সমস্যা বেড়ে যায় কয়েকগুন। জমিতে পানি ওঠায় ওই রাস্তা কিংবা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় বিকল্প রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত ৪/৫ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে ভূক্তভোগী মানুষগুলোকে পৌঁছতে হয় তাদের যারযার গন্তব্যে।
ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, সেতুটির প্রস্থতা ৬০ ফিট। চলাচল করতে হয় মাত্র এক ফিট প্রশস্ত রাস্তা দিয়ে তথা জমির আইল দিয়ে। রিক্সা-ভ্যানতো দুরের কথা এ পথে বাইসাইকেল আরোহীকে পায়ে হেঁটে ক্ষেতখামারের মধ্যদিয়ে চলতে হয়। অপরদিকে ওই সরুপথ দিয়ে উভয় দিক থেকে একইসাথে দু’জন পারাপার করতে চাইলে তবে একজনকে অবশ্যই ক্ষেতের কাঁদাজলে নামতেই হয়। কে থাকবে আইলে বলা কে নামবে কাঁদাজলে এনিয়ে অনেক সময় মৃদু তর্কবিতর্ক থেকে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্তও ঘটছে। সড়ক নির্মাণের আগেই ব্রিজ বা ব্রিজ ও সড়ক একসাথে করে অথবা সড়কের সাথে সামযস্য রেখে ব্রিজটি উচিৎ হলে কেন কি কারণে এমন অপরিকল্পিত উন্নয়ন করেছিলো দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এ অঞ্চলের কর্মকর্তারা। তাদের ইচ্ছা কি এটাই ছিলো ব্রিজ হবে ব্যবহার হবেনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী।
