জেল থেকে ছুটি নিয়ে বাইরে রাজীব গান্ধী হত্যার আসামি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাজীব গান্ধী হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নলিনী শ্রীহরণকে এক মাসের জন্য জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে আদালতে সাময়িক মুক্তির আবেদন করলে গত মাসে নলিনীর একমাসের ছুটি মঞ্জুর করেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৫) জুলাই ভেলোর জেল থেকে ওই সাময়িক সময়ের ছুটি পেয়ে নিজের বাড়ি গেছেন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী।
জানা গেছে, তাঁর মেয়ে মেগারার বিয়ে, আর সেই বিয়ের আয়োজন ও শুভ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কারণেই নলিনী শ্রীহরণকে একমাসের জন্যে কারাবাস থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে।
তাঁর মেয়ে ব্রিটেনে ডাক্তারি পড়েছেন, আগামী সপ্তাহেই দেশে ফিরে আসবেন তিনি। তবে মেয়ের বিয়ের জন্যে কিছুদিনের জন্যে জেল থেকে মুক্তি মিললেও তার উপর রয়েছে কয়েকটি কড়া নিষেধাজ্ঞা। তিনি ভেলোরের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না এবং এই সাময়িক সময়কালে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা বলতে পারবেন না তিনি।
এর আগে গতবছর তার বাবার শেষকৃত্যে যোগদানের জন্যে মাত্র একদিন প্যারোলে মুক্তি মেলে নলিনী শ্রীহরণের। তার স্বামী মুরুগানও ওই একই জেলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন। প্রাথমিকভাবে রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে নলিনীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে পরে রাজীব গান্ধীর স্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপে, তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা বদলে যাবজ্জীবন করা হয় এবং তার এই মেয়ের জন্ম জেলে থাকা অবস্থাতেই হয়।
পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট রাজীব গান্ধী হত্যায় দোষী বাকি ৬ জনেরও মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন সাজার বিধান দেয়। ৭ জন সাজাপ্রাপ্তই গত ২৮ বছর ধরে জেলে রয়েছেন।
তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে ওই সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির ব্যাপারে তদবির করা হলেও, এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি সে রাজ্যের রাজ্যপাল।
এর আগে নিজের ৬ মাসের মুক্তির আবেদন জানান নলিনী শ্রীহরণ। তিনি অভিযোগ করেন যে রাজীব হত্যায় তাকে ভুলভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি আদালতে এক আবেগপূর্ণ প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমি আমার মেয়ের প্রতি কোনও কর্তব্যই করতে পারছি না, এমনকি মাতৃত্বের দায়িত্বটুকুও পালন করতে পারছি না।’
এরপরেই তাকে একমাসের জন্যে মুক্তিদানের সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। তবে বিচারকের মধ্যে অন্যতম এমএম সুন্দরেশ তাকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়ার আগে তাকে ব্যাখ্যা করে বলেন যে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে একমাসের বেশি মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়।
