5:07 AM, 13 November, 2025

ইরানি বিজ্ঞানীকে যুক্তরাষ্ট্রে আটকে রাখার অভিযোগ

iran_13

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ প্রায় ৭ মাস ধরে ইরানের একজন বিজ্ঞানীকে যুক্তরাষ্ট্র আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই বিজ্ঞানীর ভাই। ইরানের গণমাধ্যম বিজ্ঞানীর ভাইয়ের বরাত দিয়ে রবিবার এই খবর প্রকাশ করেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাহাজে করে গ্রোথ হরমোন পাচারের চেষ্টা করার অভিযোগে বিজ্ঞানী মাসুদ সোলেইমানিকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্র।

খবরে বলা হয়, ৪৯ বছর বয়সি সোলেইমানি তেহরানের তরবিয়ত মোদ্দারেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং একজন জ্যেষ্ঠ গবেষক। তিনি স্টেম সেল নিয়ে গবেষণা করছেন। সোলেইমানি ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইরান ত্যাগ করেন।

বার্তা সংস্থা ইসনা (ইসলামিক সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকা) জানায়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ছয়মাসের একটি গবেষণার দায়িত্ব নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই শিকাগো বিমানবন্দরে তাকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে ইরনা জানায়, সোলেইমানির ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তাকে আটলান্টার ডেটন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

ইরানের রাষ্ট্র পরিচালিত ইংরেজি চ্যানেল প্রেস টিভি জানায়, মিনেসোটা রাজ্যের ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মায়ো ক্লিনিক থেকে বিজ্ঞানী মাসুদ সোলেইমানিকে একটি গবেষণা কর্মসূচি পরিচালনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

এদিকে সোলেইমানির ভাই রাসুল সোলেইমানি ইরনাকে বলেন, ‘একজন আইনজীবী নিয়োগ করার আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকমাস ধরেই আমরা স্পষ্ট করে জানতে পারছিলাম না তাকে(সোলেইমানি) কোথায় রাখা হয়েছে। ’

রাসুল ইসনাকে জানান, ১৪ মে সোলেইমানিকে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে জানায়, দুজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে বোতলে করে ইরানে গ্রোথ হরমোন পাচারের অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সোলেইমানির ভাই উল্লেখ করেন, স্টেম সেল চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়। এর সঙ্গে ইরানের উপর আরোপিত মার্কিন অবরোধের কোন সংযোগ নেই। ফলে এজন্য তাকে আটক করার বিষয়টি ঠিক নয়। মূলত আমেরিকানরা অবাস্তব কিছু দাবি করে নিজের দেশ এবং দেশের বাইরে সবাইকে বোকা বানাচ্ছে।

রাসুল ইরনাকে জোর দিয়ে বলেন, তিনি নিশ্চিত তার ভাইকে মার্কিন সরকার বন্দী করে রেখেছে।

তিনি ইসনাকে জানান, ইরানের জাতীয় নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তার পরিবার এতদিন ধরে বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেনি।

এদিকে তরবিয়ত মোদ্দারেস ইউনিভার্সিটির প্রধান মোহাম্মদ তাঘি আহমাদি ইসনাকে বলেন, ‘সোলেইমানির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি চিকিৎসা উপকরণ সংগ্রহ করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ লংঘনের চেষ্টা করেছেন। এটি হাস্যকর এবং অগ্রহণযোগ্য একটি অভিযোগ। ’

মোহাম্মদ তাঘি জানান, সোলেইমানিকে আটক করে রাখার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের একজন নাগরিককে হয়রানি করছে।

এদিকে ইরানের উপ বিজ্ঞানমন্ত্রী সালার আমোলি ইসনাকে জানান, অধ্যাপকের সঙ্গে আটক আরো দুজনকে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই মুক্তি দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সোলেইমানির মুক্তির জন্য তার মন্ত্রণালয় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।