গতকাল পৌঁছানোর কথা থাকলেও বিমানে করে মিসর থেকে আসেনি পেঁয়াজ। প্রথম চালানটি নির্ধারিত সময়ের ২৪ ঘণ্টা পর আজ ২০ নভেম্বর, বুধবার গভীর রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, মিসর থেকে সৌদি আরব হয়ে পেঁয়াজের প্রথম চালানটি আসবে বুধবার। পেঁয়াজ বোঝাইয়ে সমস্যা হওয়ায় চালান ২৪ ঘণ্টা পিছিয়ে গেছে।
তিনি জানান, সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে আকাশ ও সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। ২০ নভেম্বর থেকে ২১, ২২ ও ২৫ নভেম্বর পাঁচটি আলাদা চালানে আমদানি করা হচ্ছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
মন্ত্রী বলেন, ‘মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজবাহী সৌদি এয়ারলাইন্সের প্রথম বিমানটি ঢাকার পথে রয়েছে। এটি মিসরের কায়রো থেকে জেদ্দা হয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে ২০ নভেম্বর গভীর রাতে।
তিনি আরো জানান, এরপর প্রতিদিন অব্যাহতভাবে বিমানে করে পেঁয়াজ ঢাকায় আসবে। পেঁয়াজবাহী বিমানটি দেশে পৌঁছালেই ৪-৫শ’ ট্রাকে করে সারাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এসব পেঁয়াজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাক সেল ও ডিলারদের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে সারাদেশে বিক্রি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি আরো জানান, পেঁয়াজের মূল্য দ্রুত গতিতে কমছে। সমুদ্রপথে ১২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। আর দেশীয় পেঁয়াজও বাজারে উঠেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়। আমরা ধারণা করেছিলাম, এটা সাময়িক। তবে ২৯ সেপ্টেম্বর তারা রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিলো। সেসময় তাদের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমরা বলেছিলাম, বন্ধ করে দিলে সমস্যায় পড়ব। সেসময় ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ২৪ অক্টোবর তারা ফের পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু করবেন। কিন্তু তারা সেটা করেননি।’
সরকার শুরু থেকেই আমদানিকারকদের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানির প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ এবং মিয়ানমার মূল্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি করলে বিকল্প হিসেবে মিসর ও তুরস্ক থেকে আমদানি শুরু করা হয়। সমুদ্রপথে সময় বেশি লাগার কারণে এখন তা আকাশ পথে আমদানি করা হচ্ছে।’
মন্ত্রী জানান, দেশে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়। দেশের মজুত এবং আমদানি করা পেঁয়াজ মিলে তা পর্যাপ্ত হবে।
এরই মধ্যে দেশীয় পেঁয়াজ পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজারে আসবে উল্লেখ করে সামনে কোনো সমস্যা হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, দেশে প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আর এর বেশির ভাগই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এখন আমদানি নির্ভর না থেকে চাহিদার পুরো পেঁয়াজ দেশে উৎপাদনের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ জন্য কৃষকদের ভর্তুকি ও উৎসাহ দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, এছাড়া পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যাতে পেঁয়াজ সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরো জানান, মৌসুমের সময় পেঁয়াজ আমদানির কারণে যাতে দেশের কোনো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে জন্য ওই সময় পেঁয়াজ আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের উপযুক্ত মূল্য পান তা-ও নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম