দুই তরুণ ক্রিকেটারসহ কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসক দেবাশীষ

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় একরকম অচল হয়ে গেছে বিশ্ব। ধীরে ধীরে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মানুষ। যার প্রভাব পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। একের পর এক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টগুলো স্থগিত বা বাতিল হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন চারজনসহ দেশে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৮ জন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রীড়া সংস্থার মতো সতর্ক হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিও।
ইতোমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। যার কারণে ক্রিকেটারদের অধিকাংশই নিজ নিজ বাড়ি ফিরছেন।
গত ক’দিন খেলা না থাকলেও নিজেদের মতো অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন ক্রিকেটাররা। গত ১৬ মার্চ ডিপিএলের প্রথম রাউন্ডের খেলা শেষে ১৮-১৯ মার্চ দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এরপর লিগ বন্ধের চূড়ান্ত ঘোষণাও দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেই সাথে তিনি খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের নিজ নিজ বাসায় অবস্থানেরও আহ্বান জানান।
এদিকে সরকার যখন বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের নিজ নিজ ঘরে অবস্থানে গলদঘর্ম, তখন দারুণ এক দৃষ্টান্তই স্থাপন করলেন বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। সরকারের নির্দেশ মেনে নিজে তো কোয়ারেন্টাইনে গেছেনই, সেই সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে নিয়েছেন বিদেশ থেকে ফেরা দুই তরুণ ক্রিকেটার সাদমান ইসলাম অনিক ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী নিপুণকেও। তারাও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে জানা গেছে।
কবজির চোটে ভুগছিলেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক। আর কাঁধের ইনজুরির সঙ্গে লড়ছিলেন যুব দলের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী নিপুণ। তাদের ইনজুরির চিকিৎসার জন্য চলতি মাসের শুরুতে এই দুই ক্রিকেটারকে অস্ট্রেলিয়া পাঠায় বিসিবি। তাদের সঙ্গে ছিলেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীও।
সফল অস্ত্রোপচার শেষে অবশেষে দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে দেবাশীষ দেশে ফিরেছেন গত ১৮ মার্চ। এরপর থেকেই তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন তিনজনই।
এ তথ্য জানিয়েছে দেবাশীষ চৌধুরী সকলকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার তাগিদও দিয়েছেন। একটি দৈনিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেবাশীষ বলেন, ‘আমরা দুদিন হলো অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরেছি। আমার সঙ্গে অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফিরেছে (সাদমান ইসলাম) অনিক ও মৃত্যুঞ্জয় (চৌধুরী নিপুণ)। আমরা তিনজনই হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। সরকারের নির্দেশ এটি, আমাদের মানতেই হবে। আমরা যদি না মানি অন্যদের জন্য এটি বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
দেশের মানুষদের সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে বিদেশফেরত সবারই এটা মেনে চলা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
