আয়, নমিনি ও দায়বদ্ধতা

“ব্যাংকিং ক্যারিয়ারের ১০ বছরে দেখলাম “যত বিবাহিত মেয়ে একাউন্ট ওপেন করতে আসে ৯০% মেয়ে বা মহিলা তার স্বামীকে নমিনি দিতে চায় না কিন্তু বিবাহিত পূরুষদের ৯৫% ই স্ত্রীকে নমিনি দিতে চায়।” তার মধ্যে অনেক প্রায় ২০% আসে তার সম্পূর্ণ আয় স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রাখে। কিন্তু ২% স্ত্রী পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ যে নিজের ইনকাম স্বামীর নামে রাখা। এটাই নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য।”
সত্য হলেও এর জন্য দায়ী কিন্তু পুরুষই। বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে, পুরুষ নিজের আয় কোথায়, কখন, কিভাবে, কোন পথে, সঠিক ভাবে ব্যবহার ও বন্টন করতে পারে জানে না। যেমন, প্রয়োজন নাই। কোন এক বন্ধু বললো, আমাকে মদ বা সিগারেট খাওয়া। পকেটে ছিল। দুম করে খরচ করে নিলো। কিন্তু বউ এর এন্টিবায়োটিক ওষুধ আনার কথা দিব্যি ভুলে গেল। প্রশ্ন করলে জবাব আসে, টাকা ছিল না বা সময় পাই নি বা ভুলে গিয়েছি। বলতে পারবেন, কোন খরচ টি জরুরী ছিল?
এমনি আরেকটা উদাহরণ, এক স্বামী তার আয়ের ৯০% তার পরিবার মানে মা, ভাই, বোন, ভাগিনা ও ভাইস্তার পেছনে খরচ করে সংসার খরচের নামে ও ১০% খরচ করে নিজের সিগারেট ও অন্যান্য বিলাসিতায়। বউ- বাচ্চার পেছনে টাকা খরচই করার মানে হয় না। কারন, বউ তার মা এর খরচে চলতে পারে ও বাচ্চাকেও চালাতে পারে। তার নীতি বলে বউ- বাচ্চার লাগে না। হিসাব করে বলতে পারবেন যে, সে কতটা সঠিক ভাবে নিজের টাকা বন্টন করছে? এখানে বলাই বাহুল্য, বাবা- মা- ভাই- বোন- তাদের ছেলে মেয়েদের দেয়া বা তাদের জন্য করা বা সংসার খরচের নামে তাদের দেয়া কোন অন্যায় নয়। কিন্তু সেই পুরুষটার পরিবার ও সংসারের মধ্যে কিন্তু তার বউ বাচ্চাও পড়ে।
বিয়ের পর বউ হবার মানেই হলো সেই মেয়েটি কোন পুরুষের দায়িত্বে চলে যায়। সন্তান হবার পরে তো পুরুষটার দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। বিয়ের পরেও কারো বউ কে তার শশুর শাশুরীর বা অন্য কারো খরচে চালানো অনেক বাজে ধরনের অন্যায়। যখন নিজের পরিবার এমন ভাগে ভাগ হয় তখন কিন্তু বাবা-মা, ভাই-বোন, ভাই-বোনদের বাচ্চা কাচ্চার সাথে সাথে বউ- বাচ্চাও থাকে। বরং বউ- বাচ্চার দায়িত্ব ও অধিকার তাদের থেকে বেশি থাকে। হিসাবে এই দুই ভাগে সমান সমান বন্টন হওয়ার কথা। সমান না হলেও প্রয়োজন মাফিক কিছুটা বউ বাচ্চাকে দিতে হবে এটাই স্বাভাবিক। অর্থাৎ, বউ- বাচ্চার প্রয়োজন মিটিয়ে পরে বাকিদের জন্য প্রাণ দিয়ে করা যা বহু পুরুষই করে না। মেয়েদের ক্ষেত্রে পুরাই উল্টা। তার মস্তিস্ক মন সব জুড়েই থাকে স্বামী- সন্তান- পরিবার।
অনেক মেয়েরা শশুরবাড়ীর জন্য হয়তো করে না। কিন্তু এমন অনেক মেয়ে আছে, নিজের ও স্বামীর পুরো সঞ্চয় পরিবার, স্বামী, সন্তান ও সংসারের পাশাপাশি নিজের ও স্বামীর পরিবারের জন্যেও করে। অথচ নিজের জন্য ১ পয়সা খরচ করতেও ভাবে যে, এটা দিয়ে বাচ্চার ওটা কেনা যাবে। বাস্তব উদাহরন চাইলে সে আমি নিজেই। এটা বাদ দিলেও, এমন বহু পুরুষ রয়েছেন যাদের খুব মজা লাগে বউ এর জমাপুঞ্জি খতম করতে। তাদের খুব ভাল অভিনয় শৈলী জানা রয়েছে। অসহায়ত্ব বা অভাবের বা প্রয়োজনের বাহানায় বউ এর টাকা বা বউ কে দিয়ে শশুরবাড়ীর টাকা বা তারই সংসার খরচ বাঁচিয়ে তিল তিল করে জমানো টাকা দুম করে খরচ করে ফেলতে বা উড়িয়ে দিতে তারা বেশ ভাল জানে।
এমন স্বামীও রয়েছেন যাদের কাছে বউ এর ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড থাকে, পিন থাকে বা বউ ই বিশ্বাস করে স্বামীকে দিয়ে রাখে। আর তারা কিছুর থেকে কিছু হলেই বউ এর কার্ড খালি করে রেখে দেয়। এমনটা শুধু কার্ড এর ক্ষেত্রেই নয়, বহু স্বামী- স্ত্রীর জয়েন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটে। মেয়েরা জমায় ও সঞ্চয় করে প্রয়োজন বা বিপদ আপদের জন্য। আর ছেলেরা উড়িয়ে দেয় নিজেদের ইচ্ছার জন্য। এছাড়াও আরেকটা কারন হলো, পুরুষ বউ কে নমিনি না করলে তার মৃত্যুর পরে সেই টাকা পাবার কোন অধিকারই পায় না তার বউ বাচ্চারা। সেই টাকা-পয়সা অন্যরা চেটে পুটে খায় বা কেড়ে নেয় তা ব্যাংকের সঞ্চয় হোক বা সম্পত্তি। যেমন, আমি মরলে ব্যবসায় আমার স্বামী যে টাকা লাগিয়েছেন তার কোন টাকাই আমি বা আমার মেয়ে পাবে না যদিও সে বলে যে, কিছুটা মেয়ে, কিছুটা আমি ও কিছুটা তার মা পাবে। পুরো টাকাই তার ভাই-বোন ও তাদের ছেলে মেয়েরা চেটেপুটে খাবে।
বেঁচে থাকতেই যে স্বামীর আয়ের ১% ও আমাদের প্রয়োজনে খরচ করতে দেয়নি তার পরিবার, সে মরে গেলে কি দিবে! উল্টা আমার ছেলে নাই, উত্তরাধিকারী তার ভাই-বোনদের ছেলেরা হবে এমন আইনও দেখিয়ে দিবে লিখে দিতে পারি। স্বামীরাও বউদের নমিনি এই জন্যেই করে। তারাও জানে যে, বউ বঞ্চিত হলেও কিছু যায় আসে না। কিন্তু বউ নমিনি না হলে বউ এর সাথে সাথে তার সন্তানরাও বঞ্চিত হবে। এছাড়াও তারা এটাও জানে যে, তাদের হাতে সংসার খরচ থাকার মানে লস। তারা সঠিক ভাবে সঞ্চয়, খরচ ও বন্টন করতে পারবে না। কিন্ত বউ এর হাতে থাকা মানে হলো, হিসেব সঠিক থাকবে। সে কিছু করলে বা জমালে সন্তান ও তার বাচ্চাদের জন্যেই করবে। লস হবে না, হলে লাভ ই হবে। এটাই নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য।
মারুনা রাহী রিমি, লেখক ও কলামিস্ট

Can you be more specific about the content of your article? After reading it, I still have some doubts. Hope you can help me.
I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.