অনুভূতির সুখের মূল্য অনুভবে

প্রায় পুরুষদেরই এই একটা কথা বোঝাতেই একটা জীবন চলে যায় যে, বউরাও মানুষ, কোন রোবট নয়।
তাদেরও একটা জীবন আছে, শরীর আছে, সেই শরীরেও রোগ বাসা বাঁধে, তাদেরও ব্যথা বেদনা হয়, তাদেরও ক্লান্তি আসে, তাদেরও ঘুম পায়, তাদেরও কষ্ট লাগে, তাদেরও যন্ত্রণায় শরীর ভেঙে আসে, তাদেরও ইচ্ছা- আশা- আকাঙ্খা থাকতে পারে, তাদেরও প্রয়োজন থাকতে পারে, তাদেরও ক্ষুধা লাগতে পারে, তাদেরও পুষ্টির দরকার থাকে, তাদেরও ভাল লাগা বা খারাপ লাগা থাকে, তারাও অসুস্থ হতে পারে।
একটা সাধারন মেয়েকে খুশি করা সম্ভবত খুব বেশি কঠিন কাজ না। সাধারন মেয়েরা চায় কেউ তার একটু কেয়ার করুক, বলার আগেই কেউ তার মনের কথা বা প্রয়োজনটা বুঝে যাক। কেউ তাকে একটু ভালবাসুক শুধু তাকে দেখানোর জন্য না, মন থেকে ভালবাসুক। সে সারাদিন মানুষগুলোর জন্য যে কষ্টগুলো করে কেউ সেটার মূল্যায়ন করুক। তার রান্না বা কাজে ত্রুটি থাকতেই পারে। সেই জন্য বার বার যেন তাকে ছোট না করে। একটু তার রান্না বা কাজের প্রশংসা করুক। তাকে সময় দিতে না পারলেও একটু কল করুক ও ভাল মন্দ জিজ্ঞাসা করুক।
মাঝে মাঝে ছোট ছোট উপহার দিক। দামি হতে হবে এমন তো নয়। এমন বহু মেয়ে দেখেছি যারা একটা ফুল বা চকলেট বা বাদাম বা ঝালমুড়ি পেলেই খুশি হয়ে যায়। অন্যের কথা জানি না, আমি নিজেই তো খুশি হয়ে যাই। আজও মনে পড়ে, একদিন উনি বাসার নিচ থেকে সিদ্ধ ছোলা বুট বানানো এনেছিলো। খুব খুশি হয়েছিলাম। বলেছিলাম, “এর সাথে কাঁচা ছোলা মিলিয়ে দিলে আরও বেশি মজা হতো।”
মেয়েদের একটাই চাওয়া থাকে, তার জীবনসঙ্গী তাকে নিয়েই উচ্চতার শিখরে উঠুক, তাকে পায়ে পিষে নয়। সবার সামনে ও আড়ালেও মন থেকে সম্মান করুক, শুধু তাকে শোনাতে নয়। পরিবারে বউ এর সম্মান বজায় রাখার দায়িত্ব একমাত্র তার স্বামীর। কেননা, স্বামীর পরিবারের ছোট, বড় সদস্যরা তার বউকে সেভাবেই ট্রিট করবে যেভাবে করার সাহস আপনি তাদের দেন। আপনি কঠোর বউ এর সম্মান রাখতে চেষ্টা করলে পরিবার কেন, দুনিয়ার কেউ সাহস পাবে না আপনার বউ কে অসম্মান করার। এইটুকু কাজ যেন সে করে দেয়। এমন জীবনসঙ্গীর জন্য যেকোন মেয়ে যেকোন পর্যায় পর্যন্ত যেতে পারবে।
অনেক ছেলেদের ও তাদের পরিবারদের দেখি বউদের বদনামের ঝুলি খুলে মানুষের সামনে বসতে ও একের পর এক অসম্মানজনক কথা বলে বউকে হেয় করতে। বউ এটা করছে, বউ ওটা করছে, বউ এটা করে না, বউ ওটা করে না, বউ সকালে উঠেনা, বউ বেলা করে বাচ্চা নিয়ে ঘুমায়, বউ রান্না করে না, বউ নাস্তা করে না। আচ্ছা, একবারও কি ভেবে দেখোছেন যে আপনারা বউ এর জন্য কি করেছেন যে সে আপনাদের জন্য এটা করবে, ওটা করবে। আগে আপনি করে দেখেছেন নাকি যে বউরা করবে?
বউ একা একা চেষ্টা করেই যাবে, আর আপনারা খেলা দেখিয়েই যাবেন, আবার আশা করবেন বউটা আপনাদের জন্য এটা করবে, ওটা করবে, সব করবে। আপনারা কখনও ছাড় দিবেন না, চেষ্টা করবেন না, ত্যাগ করবেন না, সমঝোতা করবেন না, অথচ আশা করেন আপনাদের জন্য বউরা এসব কিছু করবে! চাহিদা থাকা ভাল! তবে উচ্চাশা নয়।
কিছুটা করে দেখুন তাদের জন্য। তারাও করে কি করে না দেখে নিয়েন। সাধারন মেয়ে হলে এতেই খুশি হয়ে যাবে। আর অসাধারণ মেয়ে হলে কথাই নাই। তবে সম্মান দিয়ে তাকে রোবট না মনে করে মানুষ ভেবে দেখুন। দেখবেন, সংসার জাহান্নাম মনে হবে না। সুখের জান্নাত মনে হবে।
