8:11 AM, 13 November, 2025

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারী পণ্য তৈরি, ১টি পণ্যের অনুমোদনে একাধিক পণ্য তৈরি

index

মোতৌহিদুর রহমান তাহসিন,খুলনা প্রতিনিধি:

একটি পণ্যের অনুমোদন নিয়ে তৈরি করছেন পাউরুটি, বিস্কুট, বিভিন্ন প্রকার টোস্ট, কেক, সলটেড, ড্রাই কেকসহ নানা প্রকারের খাদ্য সামগ্রী। নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, সংরক্ষণ এবং নিষিদ্ধ কেমিক্যাল ব্যবহারের দায়ে জরিমানা দিচ্ছে জেলার অনেক বেকারী। আবার এক নিবন্ধনে দুই বেকারী চালানোর সংখ্যাও কম নয়। এ সব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত অনুমোদনহীন খাদ্যপণ্য কতটা স্বাস্থ্যকর?
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বা নিষিদ্ধ কেমিক্যাল ব্যবহার করে বেকারী পণ্য তৈরি করলেও জেলার প্রতিটি পণ্যের মোড়কের গায়ে রয়েছে বিএসটিআই এর লোগো। যা দেখে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি এসব খাদ্য সামগ্রী ভ্যান, নিষিদ্ধ বেবীট্যাক্সির মাধ্যমে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারে অবাধে বাজারজাত করা হচ্ছে। স্যাঁতস্যাঁতে বেকারীর মধ্যে বিভিন্ন পাত্রে রয়েছে মশামাছির ভন-ভনানী শব্দ। মাছি আর তেলাপোকা বিচরণের পাশাপাশি ধূলাবালি তৈরিকৃত খাবারের সাথে মিশে যাচ্ছে। শ্রমিকরা নিম্নমানের অপরিশোধিত পলিপ্যাকে কেরোসিনের কুপি জ্বালিয়ে সকল খাদ্য সামগ্রী প্যাকেটজাত করছে। বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, বিএসটিআই এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বার বার এসব বেকারীকে নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, সংরক্ষণ এবং নিষিদ্ধ কেমিক্যাল ব্যবহারের দায়ে জরিমানা করলেও বেকারীর কাজ ঠিক সেভাবেই চলছে।
বিএসটিআই (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন) এর সর্বশেষ তথ্য মতে, নগরীর সদর এলাকার মধ্যে তৌহিদ বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর বিস্কুট, কেক পাউরুটি, মাসুদ বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর বিস্কুট কেক পাউরুটি, জি ফ্ডুসের বিস্কুট, কুইন বেকারীর বিস্কুট, শহীদুল ব্রেড অ্যান্ড কনঃ এর বিস্কুট কেক পাউরুটি, টিটি ফুডের কেক, সেইফ এন সেইভ এর পাউরুটি, পপুলার বেকারীর কেক, ভাই ভাই বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর পাউরুটি, বিনিময় বেকারীর বিস্কুট, শামীম বেকারীর বিস্কুট, ইসমাইল ফুডসের বিস্কুট, জনতা বিস্কুট কোম্পানির বিস্কুট, সুন্দরবন কনজুমার প্রোডাঃ চানাচুর, সেইফ এন সেইভের কেক, মিজান চানাচুর ফ্যাক্টরীর চানাচুর, তিষান চানাচুর ফ্যাক্টরীর চানাচুর, রয়েল বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর বিস্কুট, হাওড়া বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর কেক, গোবিন্দ চানাচুর, হুগলী বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর পাউরুটি, বিউটি বিস্কুট ফ্যাক্টরির চানাচুর, বাপ্পী ফুডের বিস্কুট, শহীদুল ব্রেডের বিস্কুট, নিউ তপন ও রতনের চানাচুর, নিউ মদিনা চানাচুর এবং বরিশাল বেকারীর বিস্কুট, খালিশপুর এলাকার মণিমুক্তা বেকারীর বিস্কুট, সুগন্ধা বেকারী অ্যান্ড কনফেকশনারীর বিস্কুট কেক, নাম্বার ওয়ান ফুড প্রোডাঃ বিস্কুট, একেএফ ফ্লাওয়ার মিল অ্যান্ড কনফেকশনারীর পাউরুটি বিস্কুট, করীম বেকারীর বিস্কুট, রিহাম ফুডের বিস্কুট কেক, ডুমুরিয়া উপজেলার মধ্যে মেসার্স বিসমিল্লাহ বেকারীর পাউরুটি বিস্কুট, মায়েরদান বেকারীর বিস্কুট, মেসার্স গাজী ফুড প্রোডাক্টসের বিস্কুট, স্বদেশ বিডির বিস্কুট চানাচুর। ফুলতলার মিল্লাত বেকারীরর বিস্কুট, শেখ বেকারীর পাউরুটি বিস্কুট, তিতাস বিস্কুট কোং এর বিস্কুট, ফুলতলা বেকারীর বিস্কুট, খানজাহান আলী থানাধীন এলাকার সুজন ফুড প্রোডাঃ এর পাউরুটি ঘি, হুগলী বিস্কুট কোঃ এর বিস্কুট, মিতালী ফুড ইন্ডাঃ লিঃ এর পাউরুটি, লবণচরা এলাকার বনফুল অ্যান্ড কোং এর ব্রেড বিস্কুট কেক, দৌলতপুরের থ্রি স্টার বেকারীর পাউরুটি বিস্কুট কেক, নাঈমের ফ্রেস ফুড চানাচুর, হাফিজ এন্টারপ্রাইজের চানাচুর, হুসেন বেকারীর ঘি, নিউ দৌলতপুর বেকারীর পাউরুটি কেক, আনিকা ফুড প্রোডাঃ এর বিস্কুট, শফিক অ্যান্ড ব্রাদার্স, বেবী ফুড প্রোডাঃ, খালিদ ফুড প্রোডাঃ, এসবি প্রোডাঃ, সাগর ফুড প্রোডাঃ, ইমন ফুড, সোহেল ফুড প্রোডাঃ এবং এসএম ফুড প্রোডাঃ এর চানাচুর, পাইকগাছার মেসার্স রিমি বেকারীর বিস্কুট পাউরুটি, মেসার্স মিতালী ফুড প্রোডাক্টস এর চানাচুর, আল আমিন বেকারীর বিস্কুট কেক পাউরুটি তৈরির অনুমোদন রয়েছে।
নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকার টি স্টলের মোঃ মাসুদ জানান, আমরা কিনে বিক্রি করি। অনুমোদন আছে কী না, তা আমরা জানি না। এগুলো যাদের দেখার তার দেখে না। ফলে সাধারণ মানুষ এসব খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
খুলনা বেকারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন তালুকদার জানান, আমাদের সমিতির প্রায় ৭০ জন সদস্য রয়েছে। সকলের নিবন্ধন রয়েছে। কারো নিবন্ধন না থাকলে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
বিএসটিআই (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন) পরিচালক মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, বিএসটিআই থেকে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক পণ্যের পৃথক নিবন্ধন করতে হয়। একটি পণ্যের নিবন্ধন নিয়ে অনেক পণ্য তৈরি সম্পূর্ণ বেআইনী।