12:32 AM, 13 November, 2025

গাইবান্ধায় ১০ম শ্রেণির ছাত্রী অপহরণের একমাস ১০ দিন অতিবাহিত হলেও গ্রেপ্তার হচ্ছেনা আসামী

Gaibandha-03-1

আশরাফুল ইসলাম
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ

…………………………………..
গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী অপহরণের একমাস ১০ দিন অতিবাহিত হলেও তাকে উদ্ধার বা একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ওই ছাত্রী অপহরণের পর আজ অবধি কোন যোগাযোগ হয়নি তার পরিবারের কারও সাথে। সে বেঁচে আছে কিনা এটিও জানে না তার বাবা-মা। তার বাবার অভিযোগ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি থাকার পরও অদৃশ্য কারণে অপহৃত আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারছে না পুলিশ। স্থানীয় জন-প্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে মেয়েকে উদ্ধার করতে না পেরে হতাশায় পড়েছেন ছাত্রীটির পরিবার।

দায়ের করা এজাহারে থেকে জানা যায়, গাইবান্ধা শহরের পূর্বপাড়া এলাকার বসবাসকারী এক ব্যবসায়ীর মেয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২০ ফেব্রুয়ারী দুপুরে শহরের প্রতিভা কোচিং সেন্টারে যাবার উদ্দেশ্যে ছাত্রীটি বাড়ি থেকে বের হয়। কোচিং সেন্টারে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে আল-আমিন ও তার সহযোগিরা ছাত্রীটিকে অপহরণ করে একটি মাইক্রোযোগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ছাত্রীটির চাচা ওইদিন বিকেলে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নম্বর ৮৩০/২০১৯। পরে ছাত্রীটির বাবা লোকজন নিয়ে অপহরণকারী আল-আমিনের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনের কাছে মেয়েকে ফেরত চাইলে তারা দেই-দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করে। একপর্যায়ে আল-আমিনের পরিবার ওই ছাত্রীর সাথে অপহরণকারী আল-আমিনের বিয়ের প্রস্তাব দেয় ছাত্রীর বাবাকে। তা না হলে মেয়েকে ফেরত পাবে না বলে অপহরণকারীরা জানিয়ে দেয় ছাত্রীর বাবাকে। মেয়েকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রীর বাবা গত ২২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা সদর থানায় মেয়ে অপহরণের অভিযোগে একটি এজাহার করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর থানা পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারী অপহরণ মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। যার নম্বর-৬৪/২০১৯। মামলা দায়ের করার পর আসামিরা বাড়ি ও কর্মস্থলে অবস্থান করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করা থেকে বিরত থাকে।
এদিকে মেয়ে অপহরণের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের নিস্ক্রিয়তা ও অপহৃতাকে উদ্ধারের কোন তৎপরতা না থাকায় ছাত্রীর বাবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ছাত্রীর বাবা বলেন, আসামিরা আমার মেয়েকে হত্যার পর গুম করতে পারে। আমি মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি ও পৌর মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলনের কাছে গিয়েছি। তারা মোবাইল ফোনে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান ও সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ারের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু কোন কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মেয়েকে উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য গত ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। তারপরও কোন কাজ হচ্ছে না বলে ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রযুক্তি দিয়ে চেষ্টা করছি মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য। আশা করছি, খুব দ্রুতই উদ্ধার হবে মেয়েটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *