বরগুনা প্রতিনিধি: রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড, আয়েশা আক্তার মিন্নিকে গ্রেফতার ও বরগুনার চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুনাম দেবনাথ।
প্রশ্ন: আমরা জেনেছি রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার পর আপনিই প্রথমে সামাজিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। সে ডাকে একাত্মতা প্রকাশ করে বরগুনার একটি বিশাল জনগোষ্ঠী বিচার চাইতে রাস্তায় নেমে এসেছিলো। পরবর্তীতে যে আন্দোলন সারা দেশেও ছড়িয়ে যায়। কিন্তু একটি পক্ষের অভিযোগের তীর এখন আপনার দিকেই। এ নিয়ে জানতে চাই৷
অ্যাড. সুনাম দেবনাথ : আমি সারাজীবন আমার বাবাকে দেখেছি জনমানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করতে। আমিও সে পথটি অনুসরণ করছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে হেঁটে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন হতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। সেই দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে এমন একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটার পরে আমি চুপ করে থাকতে পারি নি। আমি শুধু এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছি। কে দোষী কে নির্দোষ এটা আদালতের নির্ধারণের বিষয়। এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।
প্রশ্ন: আপনার ডাকে আন্দোলনের শুরু, কিন্তু গণমাধ্যমে এ তথ্যও এসেছে ঘাতকদের পাশে আপনার পরিবার দাঁড়িয়েছে। ব্যাপারটিকে যদিও পরষ্পর বিরোধী বলে মনে হচ্ছে তবুও জানতে চাইছি এর সত্যতা নিয়ে?
অ্যাড. সুনাম দেবনাথ : এটাকে আন্দোলন না বলে প্রতিবাদ বলাই বেশি যুক্তিযুক্ত। বিবেকের তাড়নাতেই আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করেছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যারা এসব অসত্য ও মনগড়া অভিযোগ করছেন তারা কি একটি অভিযোগেরও প্রমাণ দিতে পেরেছেন এখন পর্যন্ত? অভিযোগ যারা আনেন প্রমাণ করার দায়িত্বও তাদের উপরই বর্তায়। কিন্তু একটি অভিযোগের প্রমাণও তারা আজ অব্ধি দিতে পারেন নি। শুধু একটু ভাবুন, কিলিং মিশনে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের ভেতরে জেলা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন সক্রিয় সদস্যও রয়েছে, অন্যতম আসামি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ভায়রার ছেলে, যারা তার বাসাতেই থাকতেন এবং তাকে বাবা বলে সম্বোধন করতেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও হয়েছে। কিলিং মিশনে অংশ নেয়ার পরও জেলা ছাত্রলীগের সদস্যের বিরুদ্ধে কেনো এখনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? এসব নিয়ে একটু ভাবলেই কিন্তু অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়৷
প্রশ্ন : আপনার তথ্যেই নাকি নয়নকে বন্দুকযুদ্ধে দেওয়া হয়েছে একটি গণমাধ্যমে এমন একটি নিউজ আমরা পেয়েছি? এ নিয়ে আপনার বক্তব্য কি?
অ্যাড. সুনাম দেবনাথ : যারা এ মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছে তারা এর পক্ষে কোনো তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারে নি। নয়ন বন্ডের সাথে কস্মিনকালেও আমার সংশ্রব কিংবা সখ্যতা এর কোনোটাই ছিলো না। এ হত্যাকাণ্ডের পূর্বে তার সম্পর্কে বিশদভাবে জানা আমার পক্ষে সম্ভব হয় নি৷ হত্যাকারী নয়ন বন্ড সংক্রান্ত সকল তথ্যাদি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আওতাধীন।
প্রশ্ন : একটি পক্ষ বলছে নয়ন বন্ডের সাথে আপনার সখ্যতা নিয়ে গতবছর সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন গতবছর। তারা আপনাকে মাদক সম্রাটও বলেও অভিহিত করছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলুন।
অ্যাড. সুনাম দেবনাথ : এর কারণটা হচ্ছে, ২০১৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে কমিটি গঠনে জুবায়ের আদনান অনিক প্রথমে প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় তার অনুগত সন্ত্রাসী বাহিনী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও অর্ধশত অটোরিকশা ও দোকানপাট ভাঙচুর করে। যেটাকে বরগুনার সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয় নি। পরবর্তীকালে জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও বরগুনা জেলার ৬টি উপজেলা কমিটি গঠনের সময় অছাত্র, বিবাহিত, ধর্ষণ মামলার আসামি, এমনকি গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিদের পরিবারের লোকদের ছাত্রলীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই সময়ে নৈতিকতার জায়গা থেকে আমি এর প্রতিবাদ জানালে ছাত্রলীগ আমার কথা তো শোনেই নি উল্টো আমার প্রতিটি কার্যক্রমকে নেতিবাচকভাবে প্রচারণা চালাতে শুরু করে। শুধু সেখানেই তারা থেমে থাকে নি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র ও আক্রোশের অংশ হিসেবে সভাপতি অনিক আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। যেখানে আমি জেলা আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি সেখানে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের সব রকম নিয়ম ভঙ্গ করে ছাত্রলীগ এ সংবাদ সম্মেলন করে। সেই সংবাদ সম্মেলনে তারা যে বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন সেটাও আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের মাদকদ্রব্য সেবন ও বিক্রয়ের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ