আশরাফুল ইসলাম
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুরে ধানের পাশাপাশি সব ধরণের সবজি পাওয়া যায় এঅঞ্চলে। একারণে সবজি অধিষ্ঠত এলাকা বলে খ্যাত জেলা জুড়ে এ উপজেলার বিশেষ করে ৬ নং ধাপেরহাট ইউনিয়ন ও ৭ নং ইদিলপুর ইউনিয়নের প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে দিনক্ষণ হিসাব করে শশার চাষ করে কৃষকেরা । সে অনুযায়ী গাইবান্ধা জেলার সাদুলাপুর উপজেলার লাল মাটি অধিষ্ঠিত এলাকায় (তাজনগর,রাঘবেন্দ্রপুর লক্ষীপুর, কোনাপাড়া, দড়িপাড়া,নিজপাড়া, মধ্যপাড়া, সদরপাড়া তিলপাড়া, হাসানপাড়া পালানপাড়া বড়ছত্রগাছা, ছোট ছত্রগাছা, বলিদহ,ইসলামপুুর,হিংগারপাড়া, গোবিন্দপুর, আলিপুর, খামারপাড়া) রমজান মাসে প্রচুর শশার চাষ হয়েছে।
দাম ও ধানের কম দামে এক মণ শশা বিক্রি করে দুই মণ ধান পাওয়ায় যারা একারণে ধান চাষ করে নাই এমন শশা চাষীরা খুব খুশি শশার বাম্পার ফলনে। আর যেসব শশা চাষিরা ধান চাষ করেছে শশা বিক্রির টাকা জমা থাকায় এ ভরা মৌসুমে তাদেরকে এ মূহুর্তে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে না। তবে এর সংখ্যা সীমিত। বিঘা প্রতি জমিতে শসা চাষে মোট খরচ হয় ২১-২২ হাজার টাকা। ফলন হিসাবে শশা পাওয়া যায় কমপক্ষে ২৪৫ - ২৫০ মণ। বিঘা প্রতি শসা বিক্রি করে আয় হয় প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা। এ বছর শশা উৎপাদন মুহূর্তে রমজান মাস পড়ায় প্রতি মণ শসা গড়ে ৬০০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত বারের তুলনায় বেশি। আলু চাষের পরে বোরো ধান রোপন না করে ঐ জমিতেই শশার চারা রোপন করে ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় গত কয়েক বছরের লোকসান পুষিয়ে বাড়তি আয়ে কৃষকের চক্ষে মুখে তৃপ্তির হাসি।
শশা চাষী কৃষক আলামিন জানান, চলতি বছরের ৬ মাসের তিন মাসে আলুতে আয় হয় ৭০ হাজার টাকা খরচ বাদে লাভ বিশ হাজার টাকা। আবার আলু চাষের পরে একই জমিতে শশা চাষের ৪০দিন থেকে ৪৫দিনের মাথায় শশা ধরতে শুরু করে। ৬৬শতক জমিতে শশা চাষ করতে খরচ হয়েছে সার, কীটনাশক, বীজসহ বিভিন্ন কাজে ৪০ হাজার টাকা। শশা বিক্রি হবে ১ লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ টাকা। জমিতে শশাও ধরেছে, শশার বাম্পার ফলনে খুব খুশি হয়েছি।এক দিন পরপর জমি থেকে শশা তুলায় নগদ টাকা ঘরে আসছে । ১ম দিন জমি থেকে ৮০ কেজি শশা উঠেছে তা বিক্রি করছি ২ হাজার ৪ শত টাকা । বর্তমানে ১দিন পরপর ১২০ কেজি করে শশা উঠছে। বর্তমানে বাজার কম হলেও বেশী শশা উৎপাদনের কারণে লাভ হচ্ছে। বোরো ধান আবাদ করার চেয়ে শশা চাষ তার নিকট লাভ জনক । বর্তমানে শশার বাজার দর প্রতি মণ ৫০০/৬০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। আর দর পতন না হলে ২ বিঘা জমি থেকে ১লক্ষ ৫০হাজার শশা বিক্রি করা যাবে বলে তিনি আশা করেন। এবং সংসারের ক্রান্তিকালে দুর করে শশা চাষে এখন তার সংসারে কোনো অভাব অনটন নেই।
এলাকায় শশার বাম্পার ফলন ও দামে পোষানোর কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই লাভবান হচ্ছে। এলাকার শশা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন সাদুল্যাপুরের ধাপেরহাটে। এখান থেকে প্রতিদিন ২৫- ৩০ টি ট্রাক শশা ভর্তি করে রাজধানীর কাঁচা বাজারে যাচ্ছে । এছাড়া উপজেলার সবজী চাষের অধিষ্ঠিত গ্রামগুলোতে মাঠে মাঠে বেগুন, শশা, করলা, সহ বিভিন্ন সবজীর চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক নারী-পুরুষ কৃষক কৃষানীরা।
সম্পাদক: শামীম আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক: এস এম মিজানুর রহমান মামুন, প্রকাশক: রাজন আকন্দ
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দেশেরবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম