কুরবানিতে মিলে বান্দার মনে তাকওয়া

আবু হানিফঃ কুরবানি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দা তার নিজের ভিতরের সকল প্রকার লৌকিকতা দূর করে একমাত্র তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট পৌছার একমাত্র মাধ্যম হলো কুরবানি৷ কুরবানি একমাত্র সামর্থবানদের উপর আল্লাহ তায়ালা ফরয করে দিয়েছেন৷ যাদের উপর কুরবানি করা ফরয তাদের মাঝে কুরআনে বর্ণিত সূরা হজ্জের ৩৭ নং আয়াতের মূল যে দাবি তা আমরা কি আদায় করার মন-মানুষিকতা নিয়ে কুরবানি করতে পারছি ? না আমাদের মনের ভিতর কখনো এ বিষয়ের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে ?
আমার সামর্থ আছে আর আমি হাটের সেরা পশুটি ক্রয় করে এনেছি যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মিডিয়ার সাংবাদিকরা এসে আমার ক্রয়কৃত পশুর জন্য সাক্ষাৎকার নিয়ে টেলিভিশন, সংবাদ মাধ্যম, ফেসবুকে ফলাওভাবে প্রচার করবে দেশ বিদেশের মানুষ এই সংবাদ দেখে আমাকে সবচেয়ে বড় শিল্পপতি বলে চিনবে, আমি এলাকার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আর আমি যদি ৫/৭টি পশু কুরবানি করে মানুষের মাঝে বিতরণ করতে না পারি তাহলে মানুষ আমাকে কি বলবে এরকম মানুষিকতা নিয়ে কুরবানি করলে কুরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না৷
সূরা হজ্জের ৩৭ নং আয়াতের দাবি হলো তাকওয়া অর্জন করা আর এই কুরবানির মাধ্যমেই মিলবে বান্দার মনের তাকওয়া৷
আল্লাহ বলেন,” আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না তাদের গোশত এবং রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া ”। (সুরা আল হজ্জ-৩৭)
এই আয়াতের দাবি নিয়ে যদি আমরা কুরবানি করতে পারি তাহলে আমাদের কুরবানি কবুল হবে অন্যতায় আমরা শুধু টাকা-পয়সা খরচ করে ঢাক- ঢোল পিঠিয়ে পশু কুরবানি করলাম গোশত খেলাম, আর নাম কামাই করলাম বিনিময়ে আল্লাহর কাছে কিছুই পেলাম না ৷ আমার জীবনের সব কিছুই একমাত্র আল্লাহর রাহেই বিলিয়ে দিতে হবে৷ যদি জান-মাল সব কিছু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই বিলিয়ে দিতে পারি তাহলে আমাদের নামাজ, কুরবানি, জীবন-মরণ সব কিছুই মহান রবের নিকট গৃহীত হবে, এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন -‘‘ আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানি এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল। {সুরা আল-আনআমঃ১৬২-১৬৩}৷
আল্লাহ যদি শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)’র বান্দাদের জন্য আদম (আঃ) পুত্র কাবিল ও হাবিলের কুরাবনির যে নিয়ম ছিল তা আমাদের জন্য বর্তমানেও ব্যবস্থা রাখতেন তাহলে আমাদের সমাজে কুরবানি করার লোক কতজন পাওয়া যেত সেটা আল্লাহ মালুম হতো ৷ কারণ সে নিয়মের কারণে মানুষ কুরবানি কবুুুল হওয়ার ফলাফল সরাসরি দেখতে পেত৷ আর সে বিধান না রেখে আল্লাহ আমাদের জন্য পশুর গোশত খাওয়ার বিধান জারির কারণে কুরবানি দাতার সংখ্যা বেশি পাওয়া যায়৷ কারণ আল্লাহ তায়ালা কুরবানি দাতার মনের তাকওয়াই একমাত্র দেখেন রক্ত, গোশত এগুলো কিছুই চান না শুধু মনের তাকওয়া ভীতিটুকুই চান ,অন্য কিছুই চান না৷ তাই আমাদের সকলের উচিত নিজের নাম জশ-খ্যাতির পিছনে না দৌঁড়ে আল্লাহভীতি অন্তরে তৈরি করে কুরবানি করি ও অন্যান্য ইবাদতগুলো আদায় করতে পারি তাহলে আমরা ইহকাল ও পরকালে আল্লাহর দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের প্রতিদান আমলনামা তুলে দিবেন৷ আল্লাহ আমাদেরকে তার চাওয়া অনুযায়ী কুরবানি করার তৌফিক দান করুন, আমিন৷
