মশার ওষুধ ক্রয় সিন্ডিকেট ভেঙেছি : আতিক

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ঢাকা সিটি করপোশন মশা মারতে যে ওষুধ ব্যবহার করে, সেটি একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত। ওষুধটি আমদানি করত মাত্র দুটি কোম্পানি বিদেশ থেকে ।
ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারের মধ্যে এর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে এসেছে। কথা হচ্ছে মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও। এর মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজেই জানান ওই সিন্ডিকেটের কথা।
তবে এই চক্র ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মেয়র। বলেন, ‘এদের মধ্যে ওষুধ সরবরাহের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে এরমধ্যে ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়েছে। আর বাকি অন্য যে প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে সে দীর্ঘদিন যাবৎ ওষুধ সরবরাহ করছে।’
কোম্পানি দুটি হলো ‘লিমিট এগ্রো’ ও ‘নোকন’। এর মধ্যে লিমিট এগ্রোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, ‘১৭ কোটি মানুষের দেশে দুটি কোম্পানি ওষুধ আনবে, বাকিরা কেন পারবে না? একটি কোম্পানিকে বা দুটি কোম্পানির দিয়ে আজ পুরো জাতি কাছে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আমাদের ওষুধের মানটা কী?’
‘ইমপোর্টার আছেন তারা ওষুধ ইমপোর্ট করতে পারছে না। দুটি কোম্পানি পুরো সিস্টেমটাকে ম্যানেজ করে রেখেছে। এটা চলতে পারে না। আমরা সে সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছি।’
রাজধানীর গুলশান ক্লাবে ‘ডেঙ্গু মোকাবেলা ও পরিচ্ছন্ন নগরী বিনির্মাণ’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা হয়।
মশা মারতে নতুন ওষুধ নির্বাচন করা হয়েছে বলেও জানান মেয়র। বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিদেশ থেকে সরাসরি ওষুধ আমদানি করা হবে। কোন প্রতিষ্ঠানের থেকে এবং কী ওষুধ আনা হবে তাও ঠিক করা হয়েছে। তবে ওষুধ আনতে একটু দেরি হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় বছরের ৩৬৫ দিন ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মেয়র জানান, ‘যত দ্রুত সম্ভব একটি সেল গঠন করতে হবে। যা দুটি সিটি করপোরেশন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মিলিয়ে কাজ করবে।’
মত বিনিময়ে জানানো হয়, মশা নিধন কার্যক্রম আরো জোরালো করতে পাঁচ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আসা হয়েছে। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাদের থেকে বাড়তি ফি আদায় করা হচ্ছে কি না এবং তারা প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছে কি না তার খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে বাসা বাড়িতে কোথাও এডিস মশা জন্ম নেয়ার ব্যবস্থা আছে কি না তাও দেখা হবে।
সিটি করপোরেশনের অপারগতা স্বীকার করে মেয়র বলেন, ‘এটা সত্য যে আমরা জনগণকে খুশি করতে পারি নাই। তবুও বলব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। সিটি করপোরেশনের কাজে গতি আনতে হবে। সমন্বয় অবশ্যই করতে হবে।’
‘গবেষণা ও তথ্য সেল তৈরি করতে হবে। আমাদের কথা বলার সময় বিনয়ী হতে হবে। মশক কর্মীদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।’
মত বিনিময়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার প্রস্তাব করেন সম্পাদকেরা।
সাংবাদিক রাহাত খান বলেন, ‘ডেঙ্গু মোকাবেলায় সকল নাগরিকের দায়িত্ব আছে। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশনকেও তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় সিনিয়র সাংবাদিক রাহাত খান, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম,
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম সম্পাদক জুয়েল মাজহার, দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গাজী টেলিভিশন ও সারাবাংলা.নেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দৈনিক বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
