9:36 AM, 13 November, 2025

প্রচারণার মাধ্যমে কোচিং-ব্যাচ করাচ্ছেন শিক্ষকরা,উদাসীন শিক্ষা বিভাগ

index

মো: তৌহিদুর রহমান তাহসিন,খুলনা প্রতিনিধি:

খুলনায় স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ শিক্ষকরা কোচিং-ব্যাচের প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন প্যানা-পোস্টার। যেখানে শুধু শিক্ষকের নামই নয় রয়েছে শিক্ষকের ডিগ্রি ও কর্মরত প্রতিষ্ঠানের নাম। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থী টানতে এমন প্রচারণা করলেও উদাসীন শিক্ষা বিভাগ। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী কোনো শিক্ষকই কোচিং-ব্যাচে জড়িত নয়। আর বাইরে থাকলেও তা তাদের দেখভাল করার সময় নেই।
জানা গেছে, খুলনা মহানগরীতে প্রায় দু’শর মতো কোচিং-ব্যাচ রয়েছে কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নয় এমন ভায়া শিক্ষক কিংবা পরিচালকদের। এর সাথে গড়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের কোচিং-ব্যাচ। কোচিং বন্ধে সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের কারণে শিক্ষকরা কিছুটা ভয়ে থাকলেও বর্তমানে সবকিছু চলছে নির্ভয়ে। কেননা কোচিং-ব্যাচের সাথে শিক্ষকদের সরাসরি সম্পৃক্ততা পেয়েও তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষা বিভাগের তেমন কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি। এ কারণে বর্তমানে প্যানা-পোস্টারে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের নাম, শিক্ষকের নাম, পদবি, ডিগ্রি এবং বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন এ সব শিক্ষকরা। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা অনুযায়ী কোনো শিক্ষক কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে উৎসাহিত বা বাধ্য করতে পারবেন না। এমনকি কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর নাম ব্যবহার করে প্রচারণা চালাতে পারবেন না। এমন বিধান যেন এসব শিক্ষকের কাছে কিছুই না। কেননা শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষকদের মৌখিক কথাতেই ক্ষান্ত থাকেন। আর এজন্য মানা হয় না এসব নিয়ম।
সরেজমিন নগরীর মৌলভীপাড়া, বাইতিপাড়া, টুটপাড়া, শামসুর রহমান রোডসহ অন্যান্য এলাকায় ডুমুরিয়া কলেজ, আহসানউল্লাহ কলেজ, সিটি কলেজ, বিএল কলেজসহ অন্যান্য কলেজে কর্মরত শিক্ষকদের নাম, পদবি, ডিগ্রি ও কর্মরত প্রতিষ্ঠানের নাম সম্বলিত প্যানা-পোস্টার দেখা যায়। একই সাথে ধারাবাহিকভাবে ক্লাসও নেন শিক্ষকরা। বাইরে অপেক্ষা করেন অভিভাবক এবং পরবর্তী ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
খুলনা সিটি কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুস সোবহান বলেন, বছর দুয়েক আগে প্রশাসনের ভয়ে কিছুটা লুকোচুরি করে ক্লাস করাতেন শিক্ষকরা। এখন প্রকাশ্যে প্রচারণার মাধ্যমে ক্লাস করান। কেননা তারা জানেন তাদের কিছুই হবে না।
খুলনা বিএল কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সুরাইয়া খাতুন বলেন, স্কুল কিংবা কলেজের শিক্ষার্থীদের এখন প্রধান আকর্ষণ কোচিং-ব্যাচ। স্কুল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে যতটা না প্রচার হয় তার চেয়ে বেশি প্রচার করেন কোচিং-ব্যাচ করানো শিক্ষকরা।
খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার খোন্দকার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো পরিপত্র নেই। যার কারণে এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তারপরেও তারা শিক্ষকদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। শিক্ষকরা এসব না মেনে গোপনে গোপনে এগুলো করে থাকেন। আর এ জন্য সবসময় তাদের পাহারা দেওয়া সম্ভব না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুনর রশিদ বলেন, শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে ক্লাস নিলে শিক্ষার্থীদের কোচিং-ব্যাচমুখি হতে হয় না। শিক্ষার্থীদের বাইরের কোচিং-ব্যাচ থেকে ফেরাতে ক্লাসের প্রতি শিক্ষকদের মনোযোগী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।