3:48 PM, 13 November, 2025

ঝুঁকিপূর্ণ খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল

khulna-hospital

মো: তৌহিদুর রহমান তাহসিন,খুলনা প্রতিনিধি:

হাসপাতালটিতে বর্তমানে নেই পর্যাপ্ত জনবল। চিকিৎসক মাত্র দুইজন। মেডিকেল অফিসার আছে। শূন্য রয়েছে আরও দুটি পদ। নেই নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী। হাসপাতালটিতে যেয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের ওয়ার্ডের সামনে গরুর বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পরিষ্কার না করে তার পাশে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালটির পেছনে কয়েকটি পুরাতন পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে। যার মধ্যে মানুষের বর্জ্যরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং তার পাশে বন জঙ্গলে ভরা। মশা মাছি উড়ছে।দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল খুলনায়। যেখানে ডায়রিয়া, টিটেনাস, নিউমেটাল টিটেনাস, জলবসন্ত, হাম, জলাতঙ্ক রোগের জন্য সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। ১৯৬৮ সালে খুলনার ফুলবাড়ীগেট মীরেরডাঙ্গা ভৈরব নদের পাশে নির্মাণ করা হয়। ৫০ বছরের পুরাতন এই হাসপাতাল ভবন এখন পুরোটা জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। সামান্য বৃষ্টিতে হাসপাতালের ছাদ থেকে পানি পড়তে থাকে। হাসপাতালের ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে নিচে পড়ছে প্রতিদিন। এতে ভর্তি রোগী ও চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে চরম অসুুবিধা ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ছাদ থেকে বৃষ্টির পানি ও ধূলোবালি নিচে পড়ে অফিসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। সন্ধ্যার পর পরিত্যক্ত ভবনে দেখা যায় মাদক সেবন করার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
নাম প্রকাশ না কররা শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, ভাই হাসপাতালটি শহর থেকে একটু দূরে থাকায় কেউ নজর দেয় না। তাছাড়া একটু রাত হলেই ভেতরে পরিত্যক্ত ভবনে মাদকসেবীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। কে কার খোঁজ নিবে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপরে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী মামুন বলেন, এখানে যে দুর্গন্ধ এতে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাছাড়া এখানে সরকারিভাবে তেমন কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই। সব বাইর থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। তাছাড়া ডায়রিয়া রোগীদের জন্য প্রধান ওষুধ কলেরা স্যালাইন প্রয়োজন এখানে। সেই ব্যবস্থা নেই।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, সামান্য কিছু ওষুধ সরবরাহ হয়। আমরা চাহিদা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। তাছাড়া এখানে মাত্র দুইজন মেডিকেল অফিসার। বাকি তিনটি পদ শূন্য রয়েছে। একজন চিকিৎসককে ২৪ ঘন্টা করে ডিউটি করতে হয়। হাসপাতালটিতে মাদকসেবীদের আড্ডার বিষয়ে বলেন, পেছনে পরিত্যক্ত ভবনে রাতে যদি কেউ আসে কিভাবে কী করব বলেন।
খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হাসপাতালটি অনেক পুরানো। পাকিস্তান আমলে তৈরি। প্রায় পঞ্চাশ বছরের পুরনো হাসপাতালটিতে সিট সংখ্যা বর্তমান মাত্র ২০টি। নতুন করে ভবন তৈরি ও ৫০ শয্যার হাসপাতাল করার জন্য ইতোমধ্যে সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। এখনও কোনো উত্তর পাইনি। আর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালটিতে কোনো চিকিৎসককে পাঠানো হলে অধিকাংশই থাকতে চান না।