5:15 PM, 13 November, 2025

আমতলীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার

received_2190618257727321
এইচ.এম. রাসেল, আমতলী প্রতিনিধিঃ
বরগুনা আমতলী উপজেলার ২ নং কুকুয়া ইউনিয়নের ২০ নং পূর্ব কেওয়া বুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, দিক ওদিক হলেই পা পিছলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
কারো সাঁতার জানা না থাকলে মৃত্যুও হতে পারে। অথচ এরাই হবে একদিন এ দেশের ভবিষ্যৎ। ব্রিজ কিংবা বিকল্প রাস্তা না থাকায় নদী-খাল পাড়া পার এক মোড়া বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা।
আর এই সাঁকো পার হয়ে প্রতি নিহত আসা-যাওয়া করছে জ্ঞান পিপাসিত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন এই সাঁকো পার হতে গিয়ে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীরা ডাঙ্গায় পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
সরোজমিনে থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,আমতলী উপজেলার কুকুয়া ও আঠারো গাছিয়া দুই ইউনিয়নের সীমানাবর্তী খাগদান নদীর পাশে ২০ নং পূর্ব কেওয়া বুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়।
১৯৭১সালে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৩শত’ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিদ্যালয়েটিতে নেই কোন খেলার মাঠ, নেই কোন ভালো রাস্তা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার, বর্ষা মৌসুম এলেই বিদ্যালয়ের চারপাশে পানিতে থৈ থৈ করে, ভাল সড়ক পথের ব্যবস্থা না থাকার কারণেই বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা। একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো তখন কোমলমতি শিশুসহ স্কুলের  আসা-যাওয়ার ব্যাপারে অভিভাবক থাকে দুশ্চিন্তায়।
আর এ নিয়ে কথা হয় ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে তারা বলে,ওই সাঁকো দিয়া যাওয়ার বেলা অনেক সময় হাত থেকে বই, খাতা, কলম পড়ে যায়। সাঁকো দিয়া যেতে ধরলে নিজেদেরও হাত-পা কাঁপে। তারা জানায় সাকো দিয়ে  অনেকের পরে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
স্কুল সংলগ্ন স্থানীয় প্রতিবন্ধী দোকানদার ফজলুল করিম দৈনিক অধিকার কে জানান,এই স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী হচ্ছেন সনাতন ধর্মের( হিন্দু ধর্মের) আর এই সনাতন ধর্মের কোমলমতি শিশুরা আঠারো গাছিয়া ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন এই সাঁকো পারাপার হয়ে বিদ্যালয় আসেন।আমি এই দৈনিক অধিকার এর মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
অভিভাবকদের মধ্যে থেকে সনাতন ধর্মের পূজা মন্ডলের সভাপতি শৈলন চন্দ্র সাহা বলেন, আমাদের মহালয় কাছে প্রার্থমিক বিদ্যালয় না থাকায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে আমাদের ছেলেমেয়েদের কে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। আর ওই বিদ্যালয়ে যেতেই প্রতিদিন কোমলমতি শিশুদের বাঁশের সাঁকো পাড়াতে হয়। এজন্য বাচ্চাদের জন্য খুব টেনশন হয় কখন না জানি কি হয়ে যায়। এজন্য বাচ্চারা স্কুলে আসতে চায় না প্রতিনিয়ত।ভবিষ্যৎ কথা চিন্তা করে একটি ব্রিজ খুবই দরকার।
জেলা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন হাওলাদার মুঠোফোনে দৈনিক অধিকার কে বলেন, এই ব্রিজ এর ব্যাপারে জেলা পরিষদ এ আমি কথা বলেছি, আশা করি নিশ্চয়ই ভালো কিছু করতে পারব এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য।
উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, আমি এই স্কুলে ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই জানি। এখানে একটা ব্রিজ অতন্ত গুরুত্বপুর্ণ। অচিরেই এর একটা সমাধান করব বলে ব্যক্ত প্রকাশ করেন।
২০ নং পূর্ব কেওয়া বুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম জানান, স্কুলটি উপজেলার দুটি ইউনিয়নের সীমানায়। এলাকাটি অত্যন্ত অবহেলিত জনপদ। এখানে চলাচলের চরম দুর্ভোগ। বাচ্চারা স্কুলে আসতে গেলে প্রতিনিয়ত বাঁশের সাকো পার হতে দুর্ঘটনার শিকার হয়।দীর্ঘদিন ধরে প্রধান সড়ক  থেকে স্কুলের সাথে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়ে আসছেন।