প্রতারণার মাধ্যমে অংশীদারী ব্যবসা ও লভ্যাংশের টাকা সন্ত্রাসী কায়দায় জবর দখল

আশরাফুল ইসলাম
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার নিউ ব্রীজ রোড এলাকার ‘আবুল এন্ড রোস্তম অটোমেটিক ফ্লাওয়ার’ মিলটির অংশীদার আবুল হোসেনের কাছ থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় ও প্রতারণামূলকভাবে জবর দখল করে নিয়েছেন অপর অংশীদার রোস্তম আলী। এমনকি মিলের অংশীদার হিসেবে লভ্যাংশ বাবদ প্রাপ্য প্রায় আড়াই কোটির অধিক টাকাসহ অন্যান্য সম্পদ আবুল হোসেনকে পরিশোধ না করে তা রোস্তম আলী এককভাবে ভোগ করছেন। সংবাদ সম্মেলনে অসহায় আবুল হোসেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে প্রতিকার দাবি করেছেন।
শনিবার গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আবুল হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে উলেখ করেন, তিনি এবং একই এলাকার রোস্তম আলী রেজিষ্ট্রিকৃত অংশীদারী কারবার নামামূলে ২০১৪ সালের ১১ এপ্রিল থেকে যৌথ মালিকানায় কোমরনই মৌজায় .৯৬ শতক জমি যৌথভাবে কবলা খরিদ করে ‘আবুল এন্ড রোস্তম অটোমেটিক ফ্লাওয়ার’ মিলস্ নামক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে পরিচালনা করে আসছিলেন। উভয় অংশীদার প্রত্যেকে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা লগ্নী করে অবকাঠামো নির্মাণ ও মিলের যন্ত্রপাতি ক্রয় পূর্বক মিলে ময়দা ও ভূসি উৎপাদনের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা শুরুর পর ৪ বছরে মিলটির মোট মুনাফা দাড়ায় প্রায় ৪ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার ৯২৪ টাকা।
এমতাবস্থায় হঠাৎ করে গত ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রোস্তম আলী ঘোষণা দেন তিনি ব্যবসা এককভাবে পরিচালনা করবেন। এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে তার ভাই রুজ ও রিজু মিয়াসহ অন্যান্য গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে রিজু মিয়ার বাড়িতে বিষয়টি মিমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেসময় সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, লভ্যাংশসহ মিলের অন্যান্য সম্পদের মূল্য বাবদ ৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং তার অর্ধেক মূল্য আবুল হোসেনকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করে রোস্তম আলী একক মালিকানায় ব্যবসা করতে পারবেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত রোস্তম আলী মানতে অস্বীকার করে এবং প্রাপ্য পরিশোধ না করেই আবুল হোসেন ও তার পরিবারের লোকজনকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে মিলটির একক মালিকানা দাবি করেন। পরবর্তীতে ট্রাক মালিক সমিতির কর্মকর্তারাও বিষয়টি মিমাংসার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি অর্থ পরিশোধ না করেই ভূয়া এবং জাল কাগজপত্র সৃজন করে মিলটি জবর দখল করে এককভাবে পরিচালনা করতে থাকেন।
এমনকি সরকারি কোন লাইসেন্স গ্রহণ না করেই রোস্তম আলী মিলটির নাম পরিবর্তন করে ‘মেসার্স রোস্তম ফ্লাওয়ার মিল’ নাম দিয়ে এবং পূর্বের মার্কা পরিবর্তন করে আর.এফ.এম মার্কা দিয়ে একক মালিক হিসেবে ওই মিলে উৎপাদিত ময়দা ও ভূষি বাজারজাত করতে থাকেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে রোস্তম আলী ও তার সন্ত্রাসী সহযোগিরা আবুল হোসেন ও তার পরিবার-পরিজনকে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে। এছাড়া ওই ব্রীজ রোড এলাকায় ডিস লাইনের মালিক হওয়ায় রোস্তম আলী বেআইনীভাবে নিয়মিত মাসিক বিল পরিশোধ করা সত্তে¡ও আবুল হোসেন, তার ভাই ও আত্মীয়-স্বজনের নামে ১১টি ডিস লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
রোস্তম আলী ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীদের ভয়ে মিল ও অর্থ সম্পদ হারিয়ে অসহায় আবুল হোসেন পরিজন নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
