12:34 AM, 13 November, 2025

সৌদি আরবে শ্রমিক অসন্তোষ

received_923472414654068

মোঃ সোহেল ডিএম রানা

রিয়াদ,সৌদি আরবঃ

বতর্মানে মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি রেমিট্যান্স পাঠানোর দেশ সৌদি আরবে শ্রমিক অসন্তোষ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।

কফিল(মালিক) কিংবা কোম্পানি ঠিকমত বেতন না দেয়া, আকামা রেনু না করা সহ একাধিক নানা সমস্যায় প্রায় কয়েক লক্ষাধিক বাংলাদেশিরা আজ দিশেহারা।বাংলাদেশ দূতাবাসে কয়েকবার অভিযোগ করেও কোন লাভ হচ্ছে না। এদিকে দেশ থেকে ধার করে আনা সহায় সম্বলহীন এই মানুষগুলো আজ পাগলপ্রায়। এই কষ্ট সইতে না পেরে আত্মাহুতির পথ বেঁচে নিচ্ছেন অনেকে।

বর্তমানে উপরোক্ত সমস্যার বাইরে নতুন এক ইস্যু জন্ম নিয়েছে এখানে। সৌদি পুলিশ ও সি আইডি এখন যাকেই রাস্তায় কিংবা পথিমধ্যে এমনকি কোম্পানির গাড়ি থামিয়ে যাকেই পায় তাকেই কোন কারণ ছাড়াই ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সে বৈধ না অবৈধ তা খতিয়ে দেখেনা এবং সব শেষে তার ঠিকানা হয় বাংলাদেশে। তার মানে আকামা সহ অন্যান্য কাগজপত্র বৈধ থাকা সত্ত্বেও তাকে বাংলাদেশে ফেরত যেতে হচ্ছে।

গত ০২/০৬/১৯ তারিখ রিয়াদের নাসিরিয়া এলাকার আল মাজাল নামক এক মার্কেট থেকে আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে ১৭ জনকে ধরে নিয়ে যায় সৌদি সি আইডি পুলিশ।এই ১৭ জনের মধ্যে মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি, ২ জন ভারত ও ১ জন নেপালের।তারা সকলেই কোম্পানির বৈধ লোক ছিল। ১৪ জনের আকামা মেয়াদ ছিল আর ৩ জনের কিছু দিন হলো মেয়াদ শেষ হলো। কিন্তু তারাও অবৈধ না কেননা কোম্পানি আকামা রেনু করতে সময় নিচ্ছে। এটা তো কোম্পানির গাফলতি। কিন্তু কোম্পানীর গাফলতির কারণে তাদের দেশে চলে যেতে হচ্ছে, যদিও সৌদি পুলিশ ঐ কোম্পানীকে জরিমানা করে তাদের ছেড়ো দিতে পারতো। কিন্তু তা না করে উল্টো কেস দিয়ে তাদের সবাইকে জেলে রেখে দিল। শুধু তাই নয় বাকী ১৪ জন যাদের আকামা ও কাগজপত্র বৈধ ছিল তাদেরও একই অবস্থা হলো।তারা সবাই এখন বাংলাদেশে যাবার অপেক্ষায় আছে।উল্লেখ্য এখানে ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনই আল-হানুফ নামক কোম্পানিতে কর্মরত ছিল।হয়তো ২/৩ দিনের মধ্যেই তারা বাংলাদেশের টিকেট ধরবে।

এই ১৭ জনের মধ্যে একজন নাম তার সালাম,বাড়ী নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায়। তার সাথে কথা বলে জানা যায় সে ১৯ মাস হলো সৌদি আরব এসেছে ,এখনো ধারকৃত টাকা পরিশোধ করেনি। শুধু বাড়িভিটে ছাড়া কিছুই নেই তার। আকামা থাকা সত্ত্বেও তাকে এখন দেশে ফিরতে হচ্ছে। ফোনে কথা বলার সময় সে বার বারই মূর্চা যাচ্ছিল। এখন কে নিবে সালাম বা তার মত আরও অন্যান্য বাংলাদেশীদের এই দায় ভার?

বর্তমানে এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য সৌদি প্রবাসীরা খুব আতংক ও উদ্বিগ্নের মধ্যে সময় পার করছে। তারা এখন বিশেষ করে রিয়াদের নাসিরিয়া, উমর হামাম, মাজাল, দারাইয়া,কাজ্জান,বাতা সহ পাশ্ববর্তী এলাকার প্রবাসীরা এখন রুম থেকে ভয়ে বের হচ্ছে না কেননা এখন বৈধ কিংবা অবৈধ লোক বলে কিছু নেই, যে কেউ যে কোন সময় ধরা পড়তে পারে। সুতরাং এর পরিপেক্ষিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্রুত পদক্ষেপ সহ সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন সবাই।