নেতৃত্ব দিতে হবে এশিয়াকেই : শেখ হাসিনা

নিউজ ডেস্কঃ বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত করে এশীয় দেশগুলো কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে সমৃদ্ধির যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারে, সেই পথ খোঁজার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংঘাতময় এ বিশ্ব ব্যবস্থায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমতার ভিত্তিতে উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরেতে গিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ‘ফিউচার অব এশিয়া’সম্মেলনে’ বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতা, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও তাত্ত্বিকরা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
জাপানি সম্প্রচারমাধ্যম নিকেই কর্তৃক এ আয়োজিত এশিয়ার সম্ভাবনা ও উত্থান নিয়ে এ অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এই সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে শিনজো ছাড়াও আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি ও দেশেটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে অংশ নেবেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবতা আর শুভ শক্তির জয় হবেই। বিশ্ব আজ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, এই উদীয়মান এশিয়ার দিকে। উদ্ভাবনে, অনুপ্রেরণায় বিশ্বকে শান্তি আর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে এশিয়াকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।’
সকল প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার গল্প সম্মেলনে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এশিয়ার দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য উদারীকরণের নীতি সমর্থন করে এলেও সম্প্রতি বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য নীতির বাধা ক্রমশ বাড়ছে। বিভিন্ন দেশের ওই সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য নীতি বিশ্বে বাণিজ্য যুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার মধ্যে সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য নীতির প্রবণতা কমিয়ে আনতে কী করা যায় এবং এক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা কীভাবে আরো বাড়ানো যায়। সেই পথনির্দেশ এই ফোরাম থেকে উঠে আসবে।’
এ ব্যাপারে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বিশ্ব নানাভাবে চ্যালেঞ্জ ও সংঘাতের মুখোমুখি। বিশ্বকে আরো উন্মুক্ত করতে, ঐক্যের বন্ধনকে আরো মজবুত করার অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের সামনে চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের মোকাবেলা করতে হবে যৌথভাবে। ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকারকে রক্ষা করতে হবে। উদ্ভাবনী ধারণা ও পদক্ষেপ নিয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো বাড়াতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোতে আরও উদ্ভাবনী অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সেজন্য উদার, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক, অংশীদারিত্বমূলক যৌথ উন্নয়নের চেতনা নিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।’
এ সময় অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মানবতার স্বার্থে বাংলাদেশ যে মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, সে কথা এশীয় নেতাদের সামনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
