দেবীদ্বারে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লাঞ্ছিত:দালালকে কারাদন্ড
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালমুক্ত পরিবেশ গড়ার অভিযানে গিয়ে দালালের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহিবুস সালাম খান। ওই ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত দালাল আক্তার হোসেন (৩০)’কে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
ঘটনাটি ঘটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনে। আটক আক্তার হোসেন দেবীদ্বার পৌর এলাকার ছোট আলমপুর গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দেবীদ্বার উপজেলায় প্রায় ৩৭টি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালচক্র স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সকে জিম্মি করে রেখেছে। এতে রোগী ও স্বজনরা নিয়মিত প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। একাধিকবার সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে দালালরা আটক হলেও জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও একই কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সকালে পরিদর্শনে গিয়ে জরুরি বিভাগে দালাল আক্তারকে দেখে বেরিয়ে যেতে বললে তিনি উল্টো তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাকে আটকাতে গেলে আক্তার হোসেন শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তার শার্ট ছিঁড়ে ফেলেন। পরে স্থানীয়রা আক্তারকে আটক করে একটি কক্ষে আটকে রাখে।
সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল ইসলাম পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি সরকারি কাজে বাধা, সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করাসহ সংশ্লিষ্ট ধারায় আক্তার হোসেনকে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আক্তার হোসেন হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ, হুমকি এবং মারধরের অভিযোগে পূর্বেও বারবার জেলে গেছেন। তারা পকেটে ব্লেড বহন করে ডাক্তারদের ভয় দেখান এবং রাতে ভর্তি রোগীদের টাকা-পয়সা ও মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নৈশপ্রহরী বা আনসার না থাকায় পুরো উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মহিবুস সালাম খান বলেন, ‘জরুরি বিভাগে দালালকে দেখে বেরিয়ে যেতে বললে সে গড়িমসি করে। একপর্যায়ে তাকে বের করতে গেলে আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং শার্ট ছিঁড়ে ফেলে।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে দালালমুক্ত করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অপরাধে একজনকে তিন মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
