11:14 PM, 12 November, 2025

যমুনার পূর্বপাড়ে তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

IMG_20220531_112805

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার পূর্ব পাড়ে অসময়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে অসংখ্য ঘর-বাড়ি ও বসতভিটা। প্রতি বছর নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছেন উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়ার যমুনা তীরবর্তী লোকজন। গত কয়েক বছরের ভাঙনে ঘর-বাড়ি ও ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে শত শত পরিবার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় প্রায় ৪ থেকে ৫’শ মিটার জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ঘরবাড়ি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে পাকা আধাপাকা ঘরবাড়ি সহ অসংখ্য স্থাপনা। গোবিন্দাসী ঘাট থেকে ভালকুটিয়ার কিছু অংশ পর্যন্ত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। কিন্তু যমুনা পূর্ব পাড়ের তীরবর্তী ভালকুটিয়ার কিছু অংশ এবং চিতুলিয়া পাড়ার প্রায় ৫’শ মিটার এলাকায় ভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এছাড়াও যমুনা তীরবর্তী উপজেলার জিগাতলা গ্রামের বেশ কিছু অংশেও দেখা দিয়েছে ভাঙন।

যমুনা তীরবর্তী ভাঙন কবলিত চিতুলিয়া পাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীটি আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক থেকে দেড় মাইল দূরে ছিল। গত কয়েক বছর ধরে যমুনার ভাঙনে আমাদের ফসলের জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন একমাত্র থাকার জায়গাটুকুও ভেঙে যাচ্ছে। খুব দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে আমরা বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবো। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে আমাদের একটাই দাবি যমুনা পূর্ব পাড়ে একটি স্থায়ী বাঁধ চাই।

চিতুলিয়া পাড়া গ্রামের কাদের ড্রাইভার বলেন, আমার বাড়ি থেকে নদী অনেক দূরে ছিল। ভাঙতে ভাঙতে নদীর কিনারে এসে পড়েছি। যেকোন সময় নদীতে বিলীন হয়ে যাবে ঘরবাড়ি। এখন ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে আমার যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে নিঃস্ব হয়ে রাস্তার পাশে থাকতে হবে। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে যমুনার পূর্ব পাড়ে একটি স্থায়ী বাঁধের দাবি করে আসছি। বিভিন্ন সময় মানববন্ধনও হয়েছে, তাতেও কোন লাভ হচ্ছে না। বর্ষা আসলে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও সেগুলো সহ ফসলের জমি, ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। আমরা সরকারের কাছে খাবার চাই না যমুনা পূর্ব পাড়ে একটি স্থায়ী বাঁধ চাই।

গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ দুলাল হোসেন চকদার বলেন, ইতিমধ্যে ভাঙন কবলিত কষ্টাপাড়া ও ভালকুটিয়া এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। আমি এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। ভালকুটিয়া থেকে চিতুলিয়া পাড়া পর্যন্ত ৫’শ মিটার এলাকা ভাঙনের জরিপ পাঠানো হয়েছে। আশা করছি তারাতাড়ি ভাঙন রোধে কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা পূর্ব পাড়ের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। খানুরবাড়ি এলাকা থেকে ভালকুটিয়া এলাকার ১০০ মিটার অংশে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। বাকি অংশ কাজ করার প্রতিকূলে রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকতার সাথে কথা বলেছি। পরিবেশ অনুকূলে আসলে যমুনা পূর্ব পাড়ে আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

1 thought on “যমুনার পূর্বপাড়ে তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *