ভূট্টা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন যমুনার চরাঞ্চলের কৃষক

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা তীরবর্তী গোবিন্দাসী, গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নে রোদ্রপ্রখর যমুনা নদীর নির্লিপ্ত প্রবাহ বিরাজ করছে। শুকনো মৌসুমে যমুনার বুকে জেগে উঠা ওই বিস্তীর্ণ বালুচরে এখন ভূট্টা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চরাঞ্চরের কৃষকরা। তাঁদের চোখে, মুখে কেবল তৃপ্তির হাঁসি।
সরেজমিনে দেখা যায়, তপ্ত রোদের মধ্যেও কৃষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কেউ ক্ষেতে ভূট্রার ছড়া সংগ্রহ করছেন কেউ আবার মরা পাতা পরিস্কার করছেন। নতুন ফসল ঘরে তোলার নেশায় কৃষকের যেন দম ফেলার সময় নেই।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় দুই হাজার হেক্টর। আবাদ হয়েছে দুই হাজার ১৫২ হেক্টর জমিতে। ভূট্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০.৪৪৪ মেট্রিক টন। ভূট্টার দাম আশানুরূপ, ফলনও বেশি হয়। এ কারণে যমুনার চরে কৃষকেরা ভূট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। ভূট্টা চাষে খরচ কম, ফলনও বেশি হয়। ২ থেকে ৩ বার সেঁচ দিলেই হয়। ভূট্টা আহরণের পর বাকি অংশ পশু খাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আর এ জন্য বেশি আগ্রহ করে ভূট্টা চাষ করেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, বিগত কয়েক বছর যাবত উপজেলার চরাঞ্চলে ভূট্টা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অল্প খরচে বেশি ফসল পাওয়ায় ভূট্টা চরাঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। তবে ভূট্টা মাড়াইয়ের আধুনিক পদ্ধতি না জানায় লাভের অংশ অনেকটা কমে যায়। এখানকার উৎপাদিত ফসল জেলার চাহিদা পূরণ করে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ। তিনি ভূট্টাসহ বিভিন্ন সাথী ফসল চাষ করে থাকেন। সফল চাষী হিসেবে তিনি জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ কৃষকের সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এবার ১৬ বিঘা জমিতে ভূট্টা চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ৩০-৩৫ মন করে ভূট্টা উৎপাদন হয়। প্রতি মণ ভূট্টার মৌসুম বাজার দর ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এ হিসেবে প্রতি বিঘায় লাভ হয় ১৮-২০ হাজার টাকা। তিনি সঠিক সময়ে সার, বীজ, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহের জোর দাবি জানান।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় কৃষি সেবা প্রদান ব্যহত হচ্ছে। তবে এ বছর ভূট্টার ফলন ভাল হয়েছে। কৃষি বিভাগ চরাঞ্চলের কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং আধুনিক মাড়াই পদ্ধতি দিয়ে সহযোগিতা করলে ভূট্টা চাষে আরো বিপ্লব ঘটবে।
