বরগুনায় আমতলীর মরাজান খালের ব্রীজটি এখন মরন ফাঁদ

এইচ. এম. রাসেল,
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত গুলিশাখালী ইউনিয়নের উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মরাজান খালের আয়রন ব্রীজটি এখন মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ায় দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে। দুই উপজেলার সেতু বন্ধন ব্রীজটি ভেঙ্গে পরায় চরম ভোগান্তিতে পরেছে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজটি পাড়াপাড় হতে হয়। ব্রীজটি দ্রুত নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দূর্ঘটনায় আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী।
সরোজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত মরাজান খাল। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ ওই খালের গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ি গ্রামের(গুদিঘাটা নামক) স্থানে আয়রন ব্রীজ নির্মাণ করে।
আমতলী ও পটুয়াখালী সদর দুই উপজেলার সেতু বন্ধন এ ব্রীজটি ২০১৬ সালে ভেঙ্গে যায়। ব্রীজটি ভেঙ্গে পরায় চরম দূর্ভোগে ৫০ হাজার মানুষ ও ৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসা, উত্তর কালামপুর নুরানী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, ন.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসা, উত্তর পূর্ব কলাগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য কালিবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়াপাড় হয়ে মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এছাড়া সাপ্তাহিক স্থানীয় বাজার করতে ব্রীজ ব্যবহার করে কলাগাছিয়া বাজার, ঘাসের হাট বাজার, কালিবাড়ী , বাজারঘোনা ও মুরিচবুনিয়া গ্রামের মানুষের দু’পাড়ে যাতায়াত করতে হয়। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় সাত কিলোমিটার ঘুড়ে ব্রীজ পাড় হয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। ব্রীজটি দ্রুত নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী।সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ভাঙ্গা অংশে স্থানীয় লোকজন কলাগাছ দিয়ে রেখেছেন।
উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আবু বকর, নুর আহম্মদ, গোলাম বারী, জেসমিন ও সুরাইয়া জানান, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ব্রীজটি পাড় হয়ে মাদ্রাসায় আসতে হয়। ব্রীজের ভাঙ্গা অংশ পাড় হতে খুব ভয় লাগে, কোন সময় ব্রীজ দিয়ে পড়ে মারা যাই। গত তিন বছর ধরে ব্রীজটি এ অবস্থায় পরে থাকলেও কেউ নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে না। দ্রুত ব্রীজটি নির্মাণের দাবী জানান তারা।
স্থানীয় আবদুস সালাম মৃধা, মহিউদ্দিন ও মাওলানা রফিকুল্লাহ জানান,উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলুভী ও আমতলী জমিয়াতে মোর্দারেছিনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, গত তিন বছর ধরে ব্রীজটি ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে।ব্রীজটি ভাঙ্গার পরপরই আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলামকে জানিয়েছি কিন্তু তিনি ব্রীজ নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় গত তিন বছর ধরে ওই এলাকার বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ ৫০ হাজার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে। এ ব্রীজটি নির্মাণের জন্য উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ও উপজেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে। উপজেলা পরিষদের সভায় রেজুলেশন হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। দ্রুত ব্রীজটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রীজ ভেঙ্গে পরেছে এ খবর কেউ আমাকে জানায়নি। সরেজমিনে ওই ব্রীজটি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
